Main Slogan:

হে ইমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর (সূরা বাকারা : ২০৮)

শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৩

ইসলামী বইয়ের কিছু ওয়েবসাইট, কুরআনের তাফসীর, ইসলামী ইউটিউব চ্যানেল, ইসলামী ব্লগ ও ইসলামী জ্ঞান অর্জনের গুরুত্ব


ইসলামী বইয়ের কিছু ওয়েবসাইট, কুরআনের তাফসীর, ইসলামী ইউটিউব চ্যানেল, ইসলামী ব্লগ ও ইসলামী জ্ঞান অর্জনের গুরুত্ব
কুরআনের তাফসীর:
২২ খন্ডে প্রকাশিত বিশ্ববিখ্যাত তাফসীর যিলালিল কুরআন ডাউনলোড করুন এই লিংক থেকে: http://allislambd.blogspot.com/2012/08/blog-post_20.html
বাংলা তাফহীমুল কুরআন (সবগুলো সূরা একসাথে করে) সফটওয়্যার ডাউনলোড করুন এই লিংক থেকে: http://www.islam.net.bd/tafheem/download/
তাফসীরে ইবনে কাসীর ডাউনলোড করুন এই লিংক থেকে: http://i-onlinemedia.net/archives/3185
মা'রেফুল কুরআন ডাউনলোড করুন এই লিংক থেকে: http://www.banglakitab.com/quran.htm
বাংলা তাফহীমুল কুরআন (সবগুলো সূরা একসাথে করে) সফটওয়্যার, তাফসীরে জালালাইন শরীফ ও তাফসীরে মাযহারী ডাউনলোড করুন এই লিংক থেকে: http://allislambd.blogspot.com/2012/08/blog-post_20.html
ইসলামী ইউটিউব চ্যানেল:
Islamic Blog(ইসলামী ব্লগ):
Islamic Sign(নিদর্শন) BD: http://isignbd.blogspot.com/
Khedmot-e-Khalk (সৃষ্টির সেবা): http://khedmot.blogspot.com/
Anti Atheism BD (এন্টি নাস্তিকতা বিডি): https://antiaall.blogspot.com/
Allama Delwar Hossain Saidy: http://dhsaidy.blogspot.com/
Facebook Page:
ইসলামী বইয়ের সংগ্রহশালা: https://www.facebook.com/islamerboi
দারসুল কোরআন ওয়াল হাদিস: https://www.facebook.com/mahfiledarse
Bookmark and Share these link please.




রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩

ফী-যিলালিল কুরআন (সাইয়্যেদ কুতুব শহীদ), তাফসীরে ইবনে কাসীর, তাফহীমুল কুরআন ও অন্যন্য তাফসীর


ফী-যিলালিল কুরআন (সাইয়্যেদ কুতুব শহীদ), তাফসীরে ইবনে কাসীর, তাফহীমুল কুরআন ও অন্যন্য তাফসীর

আল্লাহর হাজার শোকর, এক সুদীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই শতকের ক্ষণজন্ম ইসলামী চিন্তানায়ক সাইয়েদ কুতুব শহীদ-এর বিশ্ববিখ্যাত তাফসীর ‘ফী যিলালিল কোরআন’ –এর বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হলো। ৫ বছরের চাইতে কিছুটা কম সময়ের ভেতরে আল্লাহ্ তায়ালা যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ (সর্বমোট ২২ খন্ডে সমাপ্ত) এই তাফসীরের অনুবাদ প্রকাশনার কাজ শেষ করার যে তাওফীক আমাদের দান করেছেন তার জন্যে আমরা একান্ত বিনয়ের সাথে আল্লাহ্ তায়ালার কৃতজ্ঞতা জানাই। (প্রথম প্রকাশনা অনুষ্ঠান ৬ জানুয়ারী ৯৫ ও সমাপনী অনুষ্ঠান ১২ই মে ২০০০)


‘ফী যিলালিল কোরআন’ ও তার প্রণেতা সাইয়েদ কুতুব শহীদ-এর পরিচয় আজকের ইসলামী বিশ্বে নতুন করে দেয়ার অবকাশ নেই। আমরা শুধু এটুকুই বলতে পারি যে, ইসলাম প্রতিষ্ঠার মহান সংগ্রামে শহীদ কুতুবের নাম যেমনি চিরস্মরণীয় হয়ে আছে, তেমনি তাঁর রচিত তাফসীর ‘ফী যিলালিল কোরআন’ও অনন্তকাল ধরে কোরআন অনুধাবনের ক্ষেত্রে একটি ‘মাইলফলক’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।



পৃথিবীর ২৫ কোটির বেশী লোক যে ভাষায় কথা বলে, যে ভাষার স্থান বিশ্ব ভাষার দরবারে পঞ্চম, সে ভাষায় কোরআনের এই সেরা তাফসীর গ্রন্থটির অনুবাদ বহু আগেই প্রকাশ হওয়া উচিত ছিলো। বিগত দু’-তিন দশকে অনেক উৎসাহী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এই দুরূহ কাজের একাধিক উদ্যোগও গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু নানা কারণে কোনো উদ্যোগই বাস্তবায়িত হতে পারেনি। আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের মতো কতিপয় গুনাহগার বান্দাকে যে তাঁর এ মহান খেদমতের জন্যে নিবাচিত করেছেন সে জন্যে তাঁর দরবারে আবারও গভীর কৃতজ্ঞতা আদায় করি।


‘ফী যিলালিল কোরআন’ –এর কঠিন অনুবাদ, জটিল সম্পাদনা এবং ব্যয়বহুল প্রকাশনা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্যে ছিলো একটি সাহসী পদক্ষেপ, বলতে গেলে এর সবটুকুই ছিলো একটি আবেগ তাড়িত সিদ্ধান্ত। কিন্তু কোনো দ্বীনি ‘জোশের’ পেছনে যে কিছু দুনিয়াবী ‘হুশ’ও প্রয়োজন, তা আমরা প্রথম দিকে টেরই করতে পারিনি। টের যখন পেলাম তখন আমাদের পথ চলা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। আল্লাহ্ তায়ালার হাজার শোকর, যাত্রার শুরুতে তিনি যদি এর বাণিজ্যিক ঝুঁকির কথাটি আমাকে ভুলিয়ে না রাখতেন তাহলে এই তাফসীরের বাংলা অনুবাদ প্রকাশনার এই উদ্যোগটি কোকোদিনই সফল হতে পারতো না।


‘ফী যিলালিল কোরআন’ বাংলাদেশের সকলশ্রেণীর বুদ্ধিজীবিমহল ও ওলামায়ে কেরাম তখা কোরআনের পাঠকদের মাঝে যে পরিমাণ সাড়া জানাতে সক্ষম হয়েছে, তা দেখে আমরা সত্যিই আনন্দে অভিভূত হয়ে গেছি। দেশের শীর্ষস্থানীয় ইসলামী চিন্তাবিদরা এই তাফসীরটির ব্যাপারে যে মূল্যবান অভিমত প্রকাশ করেছেন, তার প্রতিটি বাক্যই উল্লেখ করার মতো।


সম্মানিত পাঠক-পাঠিকাদের কাছে আমাদের একান্ত অনুরোধ, এই মহান গ্রন্থের কোথাও যদি কখনো কোনো ভুল-ভ্রান্তি আপনাদের নযরে পড়ে তাহলে কোরআনের স্বার্র্থেই তা মেহেরবানী করে আমাদের জানাবেন। শ্রদ্ধেয় ওলামায়ে কেরামের কাছেও আমাদের বিনীত নিবেদন, এই কেতাব আপনার-আমার আরোর নয়- হেদায়াতের এ মহান উৎসটির একমাত্র মালিক হচ্ছেন আল্লাহ্ তায়ালা, তাই একে যথাসম্ভব নিভূল করার প্রচেষ্টায় আপনি আপনার মূল্যবান পরামশ দিলে আমরা আনন্দের সাথেই তা গ্রহণ করবো এবং সেই আলোকে আগামী সংস্করণগুলোকে আরো সুন্দর, আরো নিখুঁত করার প্রয়াস পাবো।


বিদায়ের আগে ঊধাকাশের দিকে গুনাহর হাত বাড়িয়ে বলিঃ ‘রাব্বানা লা তুয়াআখেযনা ইননাসীনা আও আখতা’না’ –‘হে আমাদের মালিক, যদি আমরা কোথাও কিছু ভুলে গিয়ে থাকি কিংবা কোথাও যদি আমরা কোকোন ত্রুটি-বিচ্যুতি করে বসি –তুমি তার কোনোটার জন্যেই আমাদের পাকড়াও করো না। তুমি আমাদের শাস্তি দিয়ো না।’ আমীন! ছুম্মা আমীন!!


খাদিজা আখতার রেজায়ী

লন্ডন

২২ খন্ডে প্রকাশিত যিলালিল কুরআন ডাউনলোড:

Source: http://www.priyoboi.com


তাফসীরে ইবনে কাসীর ডাউনলোড করুন এই লিংক থেকে: তাফসীরে ইবনে কাসীর

তাফহীমুল কুরআন ডাউনলোড করুন এই লিংক থেকে: তাফহীমুল কুরআন


বাংলা তাফসীরে জালালাইনের বৈশিষ্ট্য ও ডাউনলোড লিংক


মূল জালালাইন শরীফের বিশুদ্ধ ও নির্ভুল বঙ্গানুবাদ।
আয়াতের সূক্ষ ইঙ্গিতের বিবরণ।
ইবারতের দুর্বোধ্য ও কঠিন শব্দ সমূহের তাহকীক।
প্রয়োজনীয় তারকীব ও মহলেস্ন ইরাবের বর্ণনা।
আয়াতের পূর্বাপর সম্পর্কের বিশদ বিবরণ।
আয়াত সংস্লিষ্ট শানেনুযূল।
কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন ঘটনার বিসত্মারিত বিবরণ।
আয়াতের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন মাসায়েলের বর্ণনা।
বিরোধপূর্ণ মাসআলায় ইমামগণের মতামত উলেস্নখ।
সূরা সমূহের নাম করণের কারণ, অবতীর্ণ হওয়ার সময়কাল ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কে নাতিদীর্ঘ আলোচনা।
সূরার সাথে পূর্ববর্তী সূরার যোগসূত্র।
সূরার বিষয় বস্ত্ত ও সারকথার বিবরণ।
বিভিন্ন গ্রহনযোগ্য তাফসীরসমূহের সারনির্যাস সংযোজন।
প্রতিটি আলোচনা শেষে উদ্ধৃতি প্রদান।
আলস্নামা ইদরীস কনদ্ধলভী (র.) রচিত মারেফুল কুরআন হতে গুরম্নত্বপূর্ণ বিষয়ের উদ্ধৃতি প্রদান।

কুরআনের আয়াত ছাড়াও তাফসীরে জালালাইনের ইবারতে হরকত সংযোজন।

বাংলা তাফসীরে জালালাইনের লিংক:

Download Link: Part-01
Download Link: Part-02
Download Link: Part-04



মা'রেফুল কুরআন ডাউনলোড করুন এই লিংক থেকে: মা'রেফুল কুরআন



কুরআন ব্যাখ্যার মূলনীতি লেখক: শাহ্ ওয়ালীউল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী



শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৩

কে আসলে কসাই কাদের আর কে কাদের মোল্লা? (ঝিনিয়া ঝিনুক, কলকাতা) এবং শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা নিয়ে দু’টি ডকুমেন্টারী



কে আসলে কসাই কাদের আর কে কাদের মোল্লা? 
-ঝিনিয়া ঝিনুক, সাবেক ইউনিয়ন নেত্রী এবং এক্টিভিস্ট কলকাতা


ছবিটিতে লাল দাগাঙ্কিত জায়গাটা দেখিয়ে মিডিয়া বার বার বলছে যে এই হল কাদের মোল্লা, পাক বাহিনীদের সাথে একসাথে মিশে সে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। ছবিতে যে লোকটিকে দেখা যাচ্ছে তার বয়স কত হতে পারে আনুমানিক আর তখন বর্তমান কাদের মোল্লা বয়স কত ছিল অন্তত এইটুকু খোজ নিলেও আমরা জানতে পারতাম কে আসলে কসাই কাদের আর কে কাদের মোল্লা। আর এই লোকটাই যে আজকের কাদের মোল্লা তার কোন উপযুক্ত প্রমান আমাদের হাতে আছে কি? যে মিডিয়াগুলো খেটে খাওয়া মানুষের কথা বলে না, যেই মিডিয়া গুলো রাষ্ট্র আর বিদেশি বেনিয়াদের দালালি করে, যেই মিডিয়া মানুষ হত্যা করে সেই মানুষের মৃত্যু নিয়ে ব্রেকিং নিউজ দেয় সেই মিডিয়ার উপরে আস্থা রেখেই আজকে আমরা কাদের মোল্লাকে কসাই কাদের বানিয়েছি। ......................... তাই কাদের মোল্লার ফাসি হওয়া এটাকে যুদ্ধ অপরাধীর বিচার বলা যাবে না। এটা একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, একটি জুডিশিয়াল কিলিং। কাদের মোল্লা আর যাই হোক সে যদি যুদ্ধ অপরাধী না হয়ে থাকে তবে এই দেশটাকে তার আরও বেশ কিছু দেয়ার ছিল। ঝিনিয়া ঝিনুক, সাবেক ইউনিয়ন নেত্রী এবং এক্টিভিস্ট। (http://satkahan.com)



শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা নিয়ে দু’টি ডকুমেন্টারী
Please browse these link:

শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৩

দ্বিতীয় আলোর মুখোমখি প্রাক্তন শিবির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মাসুদ: গণমাধ্যমের সাথে জামায়াতে ইসলামীর দূরত্ব কেন?

শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৩

"আন্ডারস্ট্যান্ড কুরআন একাডেমী": সহজে কুরআনের অর্থ হূদয়ঙ্গম করা



"আন্ডারস্ট্যান্ড কুরআন একাডেমী": সহজে কুরআনের অর্থ হূদয়ঙ্গম করা

ভারতের ভূ-পদার্থবিদ এবং বিশিষ্ট কুরআন বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল আজিজ আব্দুল রহীম দীর্ঘ ২০ বছর গবেষণা করে কুরআন শিক্ষার যে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রণয়ন করেছেন তার মাধ্যমে যে কোনো সাধারণ মুসলিমের পক্ষে খুব সহজেই কুরআনের অর্থ হূদয়ঙ্গম করা সম্ভব। ভারতের হায়দ্রাবাদ শহরে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন "আন্ডারস্ট্যান্ড কুরআন একাডেমী"।  কুরআনের মোট শব্দ সংখ্যা হলো প্রায় ৭৮,০০০। ড. আব্দুল আজিজ গবেষণা করে দেখেছেন, আমরা নিয়ত থেকে শুরু করে নামাজের মধ্যে যেসব দোয়া-দরুদ, সুরা ফাতিহাসহ কুরআনের শেষ পারার ছোট ছোট সুরা এবং কুরআনের সুপরিচিত আয়াত হামেশা তেলোয়াত করি, তাতে যতগুলো শব্দ রয়েছে সেগুলো কুরআনে ৫৫,০০০ বার এসেছে, যা কুরআনের মোট শব্দ সংখ্যার ৭০ শতাংশ।  কুরআনের মোট মৌলিক শব্দের সংখ্যা হচ্ছে প্রায় ১৮৫০। ড. আব্দুল আজিজের হিসাবমতে মাত্র ২৫০টি মৌলিক শব্দ শিখতে পারলেই কুরআনের ৭০ শতাংশ শব্দ জানা হয়ে যায়। সবচেয়ে আনন্দেন কথা হলো, নামাজের প্রয়োজনীয় দোয়া ও সুরা পড়তে গিয়ে আমরা প্রায় ৫০টি বাক্য তেলোয়াত করি, যার মধ্যে রয়েছে আনুমানিক ১৫০ থেকে ২০০টি শব্দ। কেবল এই বাক্যগুলো বোঝার চেষ্টা করলেই বাড়তি কোনো পরিশ্রম ছাড়া আরবী ভাষার কাঠামো সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে। ড. আব্দুল আজিজ হিসেব কষে দেখিয়েছেন, মনোযোগ ও আন্তরিকতার সাথে তার পদ্ধতি অনুসরণ করলে মাত্র ২০০ ঘণ্টার মধ্যে পুরা কুরআনের অর্থ আয়ত্তে আনা যায়। কেউ যদি সপ্তাহে কুরআন শিক্ষার জন্য মাত্র ৪ ঘণ্টা করে সময় বের করতে পারেন তাহলে এক বছরের মধ্যে এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। আরো বিস্তারিত জানার জন্য উত্সাহী পাঠকদের অন্তর্জালে understandquran.com ওয়েবসাইটি দেখতে অনুরোধ করছি।
- আব্দুল্লাহ আল-মামুন
লেখক :সিডনি প্রবাসী প্রকৌশলী


মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৩

জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জানার জন্য বিভিন্ন ওয়েব সোর্স।



Official Website:

News Paper and Megazine:




Islamic Youtube Chanels:


শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৩

রাসূল (সা.) এর ভালবাসা

রাসূল (সা.) এর ভালবাসা
- মুহাম্মদ আমিনুল হক

হযরত মুহাম্মদ (সা.) হলেন সর্বশেষ, সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোত্তম নবী ও রাসূল। তাঁর উপর ঈমান রাখা ও তাঁকে নিজের চেয়েও ভালবাসা মুমিনের একান্ত কর্তব্য। পবিত্র কুরআন ও হাদীস শরীফের একাধিক বর্ণনায় মুমিনদেরকে রাসূল (সা.) এর প্রতি অগাধ প্রেম-ভালবাসা বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন: ‘‘বল, তোমাদের নিকট যদি তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই, তোমাদের পত্নী, তোমাদের গোত্র, তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় কর এবং বাসস্থান -যাকে তোমরা পছন্দ কর- আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তাঁর রাহে জিহাদ করা থেকে অধিক প্রিয় হয়, তবে অপেক্ষা কর, আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত, আর আল্লাহ ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়েত করবেন না’’ (সূরা আত তাওবাহ:২৪)। তিনি আরো বলেন: ‘‘নবী মুমিনদের কাছে তাদের নিজেদের চেয়েও অধিক ঘনিষ্ঠ’’ (সূরা আল আহযাব:০৬)। নবী (সা.) বলেন: ‘‘তোমাদের মধ্যে কেউ ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না আমি তার নিকট তার পিতা, সন্তান এবং সকল মানুষের চাইতে প্রিয় হই’’ (বুখারী ও মুসলিম)। আব্দুল্লাহ ইবনে হিশাম (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমরা নবী (সা.) এর সাথে ছিলাম। নবী (সা.) হযরত ওমর (রা.) এর হাত ধরা ছিলেন। অত:পর ওমর (রা.) রাসূল (সা.)কে বললেন: হে রাসূল আমি আপনাকে সবচাইতে বেশি ভালবাসি তবে আমার নিজের চাইতে বেশি নয়। নবী (সা.) বললেন: তাহলে হবে না; আল্লাহর শপথ! তোমার নিজের চাইতেও আমাকে বেশি ভালবাসতে হবে। তখন ওমর (রা.) বললেন: এখন আমি আপনাকে নিজের চেয়েও বেশি ভালবাসি। অত:পর নবী (সা.) বললেন: হে ওমর তাহলে এখন ঠিক আছে’’ (বুখারী)।
রাসূল (সা.) কে ভালবাসার নমুনা:
মানুষ একে অপরকে ভালবাসে হৃদয়ে ও বিশ্বাসে; যার প্রতিচ্ছবি দেখা যায় তার আচার আচরণ ও কর্মে। নবী (সা.)কে ভালবাসলে তার আলামত নিশ্চয়ই আমাদের কাজে কর্মে থাকতে হবে। যারা নবী (সা.)কে ভালবাসেন তাদের মধ্যে নিম্নের আলামতগুলো বিদ্যমান থাকা আবশ্যক।
এক. রাসূল (সা.) কে সম্মান করা: এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন: ‘‘আমিতো আপনাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষ্য প্রদানকারী, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে। যাতে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন এবং রাসূলকে সাহায্য কর ও সম্মান কর এবং সকালে সন্ধ্যায় আল্লাহর তাসবীহ পাঠ কর’’ (সূরা আল ফাতহ: ৮-৯)। আমাদেরকে সব সময় নবী (সা.) কে সম্মান করতে হবে। নবী (সা.) যতটুকু মর্যাদার হক্বদার আমাদেরকে ততটুকুই মর্যাদা দিতে হবে এতে কোন কার্পণ্য করা যাবে না। রাসূল (সা.) কে সম্মান করতে গিয়ে আমাদেরকে কয়েকটি বিষয় মনে রাখতে হবে- যেমন:
ক. নবী (সা.) এর সামনে উঁচুস্বরে কথা না বলা: নবী (সা.) যখন জীবিত ছিলেন তখন তাঁর সামনে উচু আওয়াজেও কথা বলা নিষেধ ছিল। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন: ‘‘হে তোমরা যারা ঈমান এনেছ! তোমরা তোমাদের কণ্ঠস্বরকে রাসূলের কণ্ঠস্বরের উপর উঁচু করো না এবং তোমরা তাঁর সাথে এমন উঁচু স্বরে কথা বলো না; যেমন তোমরা একে অপরের সাথে উচু স্বরে কথা বলে থাক। এতে তোমাদের কর্মফল বিনষ্ট হয়ে যাবে, অথচ তোমরা টেরও পাবে না’’ (সূরা আল হুজুরাত: ০২)। তিনি আমাদের মাঝে এখন আর বিদ্যমান না থাকলেও তাঁর কথামালা রয়ে গেছে। তাই কুরআনের এ আয়াতের দিকে লক্ষ্য রেখে রাসূল (সা.) নিসৃত বাণী মনোযোগ ও সম্মানের সাথে শুনতে হবে এবং তা যথাযথভাবে আমল করতে হবে। রাসূলের কোন কথাকেই বিকৃত করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে হবে। যে সমস্ত দায়ী ইলাল্লাহ ও আলেমে দ্বীন রাসূলের বাণী প্রচার করেন; তাঁদেরকেও সম্মান করতে হবে।
খ. রাসূল (সা.) এর উপর ছালাত ও ছালাম পড়া: নবী (সা.) এর উম্মতের কর্তব্য হচ্ছে- রাসূল (সা.) এর উপর ছালাত ও ছালাম পেশ করা। এটি তাঁদের উপর ফরজ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন: ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফিরিস্তাগণ নবীর উপর ছালাম পেশ করে। অতএব, হে ঈমানদারগণ তোমরাও তাঁর উপর ছালাত ও ছালাম পেশ কর’’ (সূরা আল আহযাব: ৫৭)। এ প্রসঙ্গে নবী (সা.) বলেন: ‘‘যে ব্যক্তির সামনে আমার নাম উচ্চারিত হল; অথচ সে আমার উপর ছালাম পেশ করল না সে কৃপণ’’ (আহমদ)। তিনি এ প্রসঙ্গে আরো বলেন: ‘‘তার নাক ধুলায় মলিন হোক যে আমার নাম শুনেও আমার উপর ছালাম পেশ করল না’’ (আহমদ)। 
দুই: রাসূল (সা.) ও তাঁর সুন্নাতকে সমুন্নত রাখা: রাসূল (সা.) কে ভালবাসার অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে- তাঁকে এবং তাঁর সুন্নাতকে সবসময় সমুন্নত রাখার চেষ্টা করা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন: ‘‘এ সম্পদে হক রয়েছে মুহাজিরদের, যারা নিজেদের ঘর-বাড়ি ও ধন-সম্পদ থেকে উৎখাত হয়েছে। তারা কেবল অন্বেষণ করে আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি এবং তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাহায্য করে। তারাই তো সত্যবাদী’’ (সূরা আল হাশর: ০৮)। সাহাবীগণ রাসূল (সা.) কে ও তাঁর সুন্নাতকে জান-প্রাণ দিয়ে ভালবাসতেন। সব কিছুর উর্ধে রাসূলকে মর্যাদা দিতেন। তাঁর আদেশ-নিষেধ অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করতেন। রাসূলের আদর্শকে সমুন্নত রাখাই ছিল তাঁদের একমাত্র সাধনা। সাহাবায়ে কিরামের জিন্দেগী পর্যালোচনা করলে তাঁদের রাসূল প্রেমের অসংখ্য নজির দেখতে পাওয়া যায়। রাসূলের জন্য তাঁরা তাঁদের জীবন কুরবান করে ইতিহাস রচনা করেছেন। আমাদেরকেও তাই রাসূলের আদর্শ ও তাঁর সুন্নাতকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা করতে হবে। রাসূল (সা.) এর সুন্নাতকে সমুন্নত রাখার অর্থ হচ্ছে- রাসূলের সুন্নাত সব জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করা, একে বিশুদ্ধ রাখা, এর অপপ্রয়োগ না করা, অপব্যাখ্যা না করা ও চরমপন্থী ও বিদয়াতপন্থীদের হাত থেকে রক্ষা করা। আর যারা রাসূলের হাদীস কেন্দ্রিক বিভিন্ন সন্দেহ ও অপবাদ প্রচার করে তাদের বিরুদ্ধে সঠিক জবাব দেয়া। তাদের মিথ্যা প্রচারণাকে মানুষের সামনে যুক্তি দিয়ে অসার প্রমাণ করা।
তিন: রাসূল (সা.) যা বলেছেন তা সত্য বলে মেনে নেয়া: ঈমানের অন্যতম দাবী হচ্ছে- রাসূল (সা.) কে সকল প্রকার মিথ্যা ও অপবাদের উর্ধে রাখা। তিনি যা বলেছেন সত্য বলেছেন, এই বিশ্বাস হৃদয়ে ধারন করা। তিনি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে যা খবর দিয়েছেন তাকে সত্য জানা। এ প্রসংঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন: ‘‘নক্ষত্রের কসম, যখন অস্তমিত হয়। তোমাদের সঙ্গী পথভ্রষ্ট হননি এবং বিপথগামীও হননি। এবং প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলেন না। কুরআন অহী, যা প্রত্যাদেশ হয়’’ (সূরা আন নাজম:১-৪)। নবী (সা.) কে অপবাদ দেয়া ও তাঁর কথাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা কুফুরী। এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা মুশরিকদেরকে নিন্দা জ্ঞাপন করে বলেন: ‘‘আর কুরআন সে জিনিস নয় যে, আল্লাহ ব্যতীত কেউ তা বানিয়ে নেবে। অবশ্য এটি পূর্ববর্তী কালামের সত্যায়ন করে এবং সে সমস্ত বিষয়ের বিশ্লেষণ দান করে যা তোমার প্রতি দেয়া হয়েছে, যাতে কোন সন্দেহ নেই- তোমার বিশ্বপালনকর্তার পক্ষ থেকে। মানুষ কি বলে যে, এটি বানিয়ে এনেছ? বলে দাও, তোমরা নিয়ে এসো একটিই সূরা, আর ডেকে নাও, যাদেরকে নিতে সক্ষম হও আল্লাহ ব্যতীত, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’’ (সূরা ইউনুস:৩৭-৩৮)।
চার: রাসূল (সা.) এর অনুসরণ ও আনুগত্য: রাসূল (সা.) কে মহববত করার অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে- নবী (সা.) যা বলেছেন এবং যা করেছেন তার পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ ও আনুগত্য করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন: ‘‘যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রাসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। (সূরা আল-আহযাব:২১)। রাসূল (সা.) এর আনুগত্য করা ফরজ। এ সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসের অনেক নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন: ‘‘রাসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক’’ (সূরা আল-হাশর:৭)। আল্লাহ তায়ালা রাসূলের আনুগত্যকে তাঁর আনুগত্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন: ‘‘যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করে সে আল্লাহর আনুগত্য করে’’ (সূরা আন-নিসা: ৮০)। রাসূল (সা.) এর আনুগত্যের বিষয়ে অনেক হাদীস বিধৃত হয়েছে। নবী (সা.) বলেন: ‘‘তোমাদের কর্তব্য হচ্ছে- আমার এবং খোলাফায়ে রাশেদার সুন্নাতকে আকড়ে ধরা। এবং তা শক্তভাবে দাঁত কামড়িয়ে যেভাবে ধরে সেভাবে ধরবে। সাবধান! তোমরা ধর্মের মধ্যে নতুন বিষয় থেকে দূরে থাকবে। নিশ্চয়ই প্রত্যেক নতুনত্বই (ধর্মের মধ্যে) বিদয়াত। আর প্রত্যেক বিদয়াতই ভ্রষ্টতা’’ (আহমদ, আবু দাউদ, তিরমিযি)। অতএব, প্রত্যেক কাজে রাসূলের অনুগত্য করাই হচ্ছে রাসূলের মহববত। আর তাই রাসূলের মহববত যত বাড়বে রাসূলের আনুগত্যও তত বাড়বে। আল্লাহ তায়ালা বলেন: ‘‘বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহও তোমাদিগকে ভালবাসেন’’ (সূরা আল-ইমরান: ৩১)। 
পাঁচ: আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) কে সর্ব বিষয়ে চূড়ান্ত ফয়সালাকারী হিসেবে মেনে নেওয়া: মানব সমাজ বিবাদের উর্ধে নয়। সমাজের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন বিষয়ে মতদ্বৈততা থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে এই বিবাদ মিটানোর জন্য আমাদেরকে রাসূল (সা.) এর নীতি অনুসরণ করতে হবে। তিনি যে পথনির্দেশ দেখিয়েছেন সেটিকেই চূড়ান্ত হিসেবে মেনে নিতে হবে। রাসূল (সা.) কে ভালবাসার এটিও একটি নজির। যিনি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে সর্ব বিষয়ে শালিস মানতে পারেন না তিনি মুসলমান দাবি করতে পারেন না। এ প্রসংগে আল্লাহ বলেন: ‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও রাসূলের এবং তাদের যারা তোমাদের মধ্যে ফয়সালার অধিকারী। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে মতভেদ কর, তবে তা প্রত্যার্পণ কর আল্লাহ তাঁর রাসূলের প্রতি। যদি তোমরা ঈমান এনে থাক আল্লাহ এবং শেষ দিবসের প্রতি। আর এটাই উত্তম এবং পরিণামে কল্যাণকর’’ (সূরা আন-নিসা:৫৯)। তিনি আরও বলেন: ‘‘তবে না; আপনার রবের কসম! তারা মুমিন হবে না যে পর্যন্ত না তারা আপনার উপর বিচারের ভার অর্পণ করে সেসব বিবাদ-বিসম্বাদের যা তাদের মধ্যে সংঘটিত হয়, তারপর তারা নিজেদের মনে কোনরূপ দ্বিধা-সংকোচ বোধ না করে আপনার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে এবং সর্বান্তকরণে তা মেনে নেয়’’ (সূরা আন-নিসা:৬৫)। যারা নিজেদেরকে মুসলমান দাবি করে অথচ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ফয়সালা মেনে নেয় না তারা মূলত: মুনাফিক; ইসলামের সাথে তাঁদের সম্পর্ক থাকতে পারে না। আল্লাহ বলেন: ‘‘আপনি তাদের দেখেননি যারা দাবি করে যে, আপনার প্রতি যা নাযিল হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা নাযিল হয়েছে তাতে তারা বিশ্বাসী? অথচ তারা বিচারপ্রার্থী হতে চায় তাগুতের কাছে, যদিও তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করতে। আর শয়তান তাদের পথভ্রষ্ট করে বহু দূরে নিতে চায়। আর যখন তাদের বলা হয়, এস আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দিকে এবং রাসূলের দিকে, তখন আপনি মুনাফিকদের দেখবেন আপনার কাছ থেকে সম্পূর্ণভাবে মুখ ফিরিয়ে সরে যাচ্ছে’’ (সূরা আন-নিসা: ৬০-৬১)।
রাসূল (সা.) কে ভালবাসার নামে বাড়াবাড়ি : আমাদের সমাজে অনেকেই আছেন যারা রাসূল (সা.)কে মহববত করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করেন। অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি মানুষকে পথভ্রষ্ট করে। রাসূল মাটির তৈরী নয়, তিনি গায়েব জানেন, দুনিয়া ও আদম সৃষ্টির আগে রাসূলকে সৃষ্টি করা হয়েছে, নবী (সা.) কল্যাণ-অকল্যাণের মালিক এরকম অসংখ্য অশুদ্ধ কথা বাজারে প্রচলিত আছে। এই সমস্ত বাড়াবাড়ি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল পছন্দ করেন না। আল্লাহ বলেন: ‘‘আর এটিই আমার সরল সঠিক পথ, অতএব তোমরা এ পথেই চল, বক্র পথে চলো না। চললে সেসব পথ তোমাদেরকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে’’ (সূরা আল-আনয়াম: ১৫৩)। নবী (সা.) তাঁর সম্পর্কে অতিরিক্ত প্রশংসা করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন: ‘‘তোমরা আমার অতিরিক্ত প্রশংসা করো না; যেভাবে ইহুদীরা ঈসা ইবনে মরিয়মকে নিয়ে করেছে। আমি কেবল আল্লাহর বান্দা। অতএব তোমরা বল: আমি আল্লাহর বান্দা ও রাসূল’’ (বুখারী)। আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: একদা একব্যক্তি নবী (সা.) কে বললেন: আপনি এবং আল্লাহ যা চেয়েছেন তাই হয়েছে। তখন নবী (সা.) বলেন: তুমি আমাকে আল্লাহর সমকক্ষ বানিয়ে ফেললে; বরং তুমি বল, একমাত্র আল্লাহ যা চেয়েছেন তাই হয়েছে’’ (আহমদ)। এভাবে অনেক হাদীসে নবী (সা.) তাঁকে নিয়ে অতিরিক্ত ভক্তি, প্রশংসা ও যেকোন ধরনের বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন।
পরিশেষে আমি সকল মুসলিম ভাই-বোনদের উদ্যেশ্যে বলতে চাই যে, রাসূল (সা.) কে আমাদের হৃদয় দিয়ে ভালবাসতে হবে; কিন্তু সে ভালবাসা যেন হয় শরীয়তের গন্ডির মধ্যে থেকেই। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা রাসূল (সা.) কে ভালবাসতে গিয়ে এমন কথা বলেন বা বিশ্বাস রাখেন যা মূলত: আল্লাহর শানে মানায়। এরকম কথা ও বিশ্বাসকে পরিহার করে রাসূল (সা.) যা করতে বলেছেন এবং তিনি যা করেছেন তার হুবহু অনুকরণ করতে পারলেই তাঁর পরম ভালবাসার পাত্র হওয়া যাবে, অন্যথায় নয়। মনে রাখা দরকার, রাসূলের নামে মিলাদ-মাহফিল কিংবা রাসূল (সা.) এর নাম শুনে মুখে আঙ্গুল নিয়ে চুমু খেয়ে চোখে লাগানো ও জশনে জুলুস করা যত প্রয়োজন তাঁর চেয়ে বেশি প্রয়োজন মসজিদে গিয়ে জামায়াতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, বছরে একবার রমজান মাসে শুদ্ধভাবে রোযা রাখা, ইসলামের বিধান মানা, হারাম থেকে দূরে থাকা, সৎ কাজের আদেশ দেয়া ও অসৎ কাজে বাধা দেয়া, ব্যক্তি, পরিবার ও রাষ্ট্রের মধ্যে ইসলাম কায়েমের চেষ্টা করা। এগুলোর মধ্যেই রাসূলকে পাওয়া যাবে; পাওয়া যাবে তাঁর মহববত। রাসূল (সা.) এর নামে মিলাদ-মাহফিল করলাম কিন্তু তাঁর আদর্শকে বুকে ধারণ করতে পারলাম না এটি দু:খজনক। আমি যাকে ভালবাসব তাকে তার পছন্দ অনুযায়ী ভালবাসতে হবে; না হয় ভালবাসা হয় না; হয় প্রতারণা। রাসূলকে ভালবাসতে হলে তাই রাসূলের নির্দেশিত পন্থায়ই তাঁকে ভালবাসতে হবে; নচেৎ এই সমস্ত নেফাকী ভালবাসা দিয়ে আল্লাহর রেজামন্দি হাসিল সম্ভব নয়; নয় রাসূলের খাঁটি উম্মত হওয়া। আল্লাহ আমাদেরকে রাসূল (সা.)-এর পরিশুদ্ধ ভালবাসা অর্জনের তাওফীক দিন। আমীন।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম।
ই-মেইল: aminulhoque_iiuc@yahoo.com


রাসূল (সা.) এর প্রতি ভালোবাসা | ইসলাম ও জীবন |

Relaeted Other Islamic Blog

Other Blog-site: