Main Slogan:

হে ইমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর (সূরা বাকারা : ২০৮)
TIPS IN BANGLA লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
TIPS IN BANGLA লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১০

ইভটিজিং রোধে ইসলামী অনুশাসন


মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম

ইভটিজিং বর্তমান সময়ের বহুল আলোচিত একটি বিষয়। এটি একটি সামাজিক ব্যাধি হিসেবে রূপ নিয়েছে। ইদানীং বাংলাদেশে এ সমস্যা প্রকট আকারে দেখা দিয়েছে। যার শিকার হচ্ছে বিভিন্ন বয়সের নারী, বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী মেয়েরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইভটিজাররা বখাটে, লম্পট ও মাদকাসক্ত হয়ে থাকে বলে মান হারানোর ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ ছেলেরাও মেয়েদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ইভটিজিং করে থাকে। তারা মনেই করে না যে এটা এক ধরনের অপরাধ। ফলে নিরীহ মেয়েরা চরম বিব্রত ও অপমানিত হয়। পরিবার ও সমাজের কাছ থেকে মানসিক সাপোর্ট না পেয়ে, অপমান সহ্য করতে না পেরে রাগে-দুঃখে-ক্ষোভে আত্মহননের পথ বেছে নেয় অনেক সময়। ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে পিংকি, সিমি, তৃষা, কাজলী, ইলোরা, বৃষ্টি ও ফাহিমাদের মতো নাম না জানা অনেকেই অকালে ঝরে গেছে।
ইভটিজিং বলতে আমরা বুঝি মেয়েদের উত্ত্যক্তকরণ। এমন ধরনের আচরণকে বোঝায় যা মেয়েদের যৌন হয়রানি, শ্লীলতাহানি বা অসৌজন্যমূলক আচরণের মাধ্যমে নারীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মধ্যে ফেলা। এক গবেষণায় জানা যায়, বাংলাদেশে ১০-১৮ বছর বয়সী মেয়েদের প্রায় ৯০ ভাগ নিয়মিত ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন। ইভটিজিং নিয়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা-সমালোচনা, সভা-সমাবেশ, গোলটেবিল বৈঠক ও সেমিনারের আয়োজন করা হচ্ছে, বিভিন্নজন নানা দৃষ্টিকোণ থেকে এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং এর কারণ উল্লেখ করেছেন। মূলত আমরা ইভটিজিংয়ের মূল কারণ হিসেবে যা উল্লেখ করব, তা হলো নৈতিকতার অবক্ষয় ও ইসলামী অনুশাসন তথা ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাব। যাদের সামাজিকীকরণ ইসলামী অনুশাসনের মাধ্যমে হয়নি, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার ছোঁয়া পায়নি, কুশিক্ষা বা নোংরা পরিবেশে বল্গাহীন-বেপরোয়াভাবে বড় হয়েছে; তাদের দ্বারাই মেয়েরা ইভটিজিংয়ের শিকার হয়। তাদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার আলো নেই এবং ইসলামী চেতনাবোধ নেই। তারা খাও-দাও ফূর্তি কর, দুনিয়াটা মস্ত বড় এই নীতিতে বিশ্বাসী। অপরদিকে যারা ইভটিজিংয়ের শিকার হন তাদের দায়ভার কোনো অংশে কম বলা যায় না। মেয়েরা এমনিতেই আল্লাহপাকের আকর্ষণীয় সৃষ্টি। উপরন্তু যদি মেয়েরা পাশ্চাত্যের অনুকরণ করতে গিয়ে ছেলেদের মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য নিজেকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করে, তাহলে তো দুর্ঘটনার উপলক্ষ তৈরি হতেই পারে। মেয়েদের দেহসৌষ্ঠব ও মোহিনীশক্তি ছেলেদের মস্তিষ্কে এক ধরনের উত্তেজক বার্তা পাঠায়। ধর্মীয় মূল্যবোধ, আত্মসংবরণ করার শক্তি বা নিয়ন্ত্রণ না থাকলে সেটাই টিজিং হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে।
ইভটিজিং নামক এ সামাজিক ব্যাধি রোধ করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু বিরাজমান অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না, অবনতিও রোধ করা যাচ্ছে না। ইসলাম আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগেই এর সুন্দর একটি সমাধান দিয়েছে। তা হলো পর্দা ফরজ করা হয়েছে। পর্দা ব্যবস্থায় নারী-পুরুষের জন্য এমন একটি ভারসাম্যপূর্ণ বিধান রাখা হয়েছে যা অত্যন্ত বাস্তবসম্মত ও কার্যকর। ইভটিজিং প্রতিরোধে পর্দা প্রথা অত্যন্ত কার্যকরী একটি ব্যবস্থা।
কোনো পর্দানশিন মেয়ে ইভটিজিংয়েংর শিকার বা কোনোভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন শোনা যায়নি। পর্দানশিন ও শালীন পোশাকে আবৃত কোনো মেয়েকে দেখলে বখাটেরা নিরুত্সাহী হয়ে রাস্তা ছেড়ে দেয়। নিজের অজান্তেই তাদের মধ্যে এক ধরনের শ্রদ্ধাবোধ চলে আসে। তাই শালীন ও ভদ্র পোশাক পরিধান করার ব্যাপারে উত্সাহিত করা হয়েছে। জনসম্মুখে জাঁকজমকপূর্ণ, অশালীন এবং বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষণ করে এমন পোশাক পরিধান করার ব্যাপারে ইসলামে নিষেধ করা হয়েছে। শরীরের অঙ্গগুলোতে পর্দা করার জন্যই পোশাকের প্রবর্তন করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন—‘হে বনি আদম! আমি তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবতীর্ণ করেছি দেহাবরণ বস্ত্র। আর পরহেজগারির পোশাকই হচ্ছে সর্বোত্তম।’ (সূরা-আরাফ, আয়াত-২৬)
শালীন পোশাক মহিলাদের সম্ভ্রান্ত হিসেবে উপস্থাপন করে এবং ইভটিজিংসহ অন্যান্য নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করে। পবিত্র কোরআনে এরশাদ করা হয়েছে—‘হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রী-কন্যা ও মুসলিম নারীদের জানিয়ে দিন, তারা যেন তাদের শরীরের ওপর চাদর ঢেকে দেয়, তাতে সহজেই তাদের চিনতে পারা যাবে (সম্ভ্রান্ত মহিলা হিসেবে) এবং তাদের আর নির্যাতিতা হতে হবে না, তারা বেইজ্জতি থেকে রক্ষা পাবে।’ (সূরা-আহজাজ, আয়াত-৫৯)
পাশ্চাত্যে নারীরা নিজেদের পুরুষদের সামনে উপস্থাপন করার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। আর এর অনুকরণে মুসলিম নারীরা নিজেদের আকর্ষণীয় হিসেবে উপস্থাপন করার জন্য অশালীন পোশাক পরিধান করার ব্যাপারে ইসলামে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বলা হয়েছে—‘আর মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। তারা যেন যা এমনিতেই প্রকাশমান এমন সৌন্দর্য ছাড়া তাদের কোনো রকম সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন তাদের ওড়নাকে বক্ষদেশে দিয়ে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজ ছেলে, স্বামীর ছেলে, আপন ভাই, আপন ভাতুষ্পুত্র, আপন ভাগ্নে, মুসলিম মহিলা, ক্রীতদাস ও দাসী, কামভাবমুক্ত বৃদ্ধ ও এমন নাবালক যারা এখনও নারীর গোপনীয়তা সম্পর্কে বোঝে না—শুধু তাদের ছাড়া আর কারও কাছে সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে।’ (সূরা-নূর, আয়াত-৩২)
ইসলামে শুধু যে নারীদের পর্দা করতে বলা হয়েছে, তা নয়। পুরুষদেরও তাদের দৃষ্টি ও যৌনাঙ্গ হেফাজত করতে বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! মুমিন পুরুষদের বলুন তারা যেন দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। এতে তাদের জন্য রয়েছে উত্তম পবিত্রতা। নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। এবং ঈমানদার নারীদের বলুন তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে।’ (সূরা-নূর, আয়াত-৩১)
শর্টকাট পোশাক পরে আল্ট্রামডার্ন হওয়ার মধ্যে নেই কোনো সম্মান, নেই নিরাপত্তা। বরং ইসলামী পোশাক ও সংস্কৃতি ধারণের মধ্যেই নিহিত রয়েছে ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি। এ প্রসঙ্গে আমেরিকান মহিলা সাংবাদিক ‘হেলেনে’র কথা উল্লেখ করা যায়। তিনি আরব দেশ ভ্রমণকালে নারীদের পর্দা প্রথা ও সামাজিক ব্যবস্থা দেখে অভিভূত হয়ে বলেছিলেন—‘আরবীয় সমাজ সুষ্ঠু সমাজ। আরবদের সামাজিক নীতিমালা এতই উপযোগী যে প্রতিটি তরুণীর তা গ্রহণ করা উচিত। আমেরিকা ও অন্যান্য ইউরোপিয়ান দেশে তো এরকম সুশীল সামাজিক অবস্থা অনুপস্থিত। সে দেশগুলোতে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার নিঃশর্ত অনুমতি দেয়া হয়েছে, চারিত্রিক গুণাবলীর কোনো সুনাম নেই। সব ধরনের অশ্লীলতা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। সভ্যতা ও সংস্কৃতির অন্তরালে সেখানকার সমাজ উন্মাদনা ও বিশৃঙ্খলায় পরিপূর্ণ।’
সবশেষে আশাবাদের সঙ্গে এটুকু বলা যায়, আমাদের দেশে যদি ইসলামী মূল্যবোধ ও অনুশাসন ব্যাপক হারে অনুসরণ করা যায়, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে যদি ইসলামী মূল্যবোধ ও চেতনাটুকু জগিয়ে দেয়া যায় তাহলে আইন করে নয়, এমনিতেই ইভটিজিংসহ অন্য সব রকমের অপরাধ করার প্রবণতা ন্যূনতম পর্যায়ে চলে আসবে।
লেখক : প্রাবন্ধিক, ইসলামী ইতিহাসের ছাত্র

শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১০

অন্দরে ঈদ

ঈদ এলে অন্দরেও পড়ে যায় সাজ সাজ রব। অতিথি আপ্যায়নে ঘরের সাজের দিকেও থাকে কড়া নজর। তবে এ জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে ঈদের তিন-চার দিন আগ থেকেই।

অন্দরের বিন্যাস
‘ঈদ উৎসব উপলক্ষে মানুষ নতুনত্বের আয়োজনে ঘরের পুনর্বিন্যাস করে থাকে। যদি কেউ ঘরের পুনর্বিন্যাস করতে চায়, তাকে ভারসাম্য, ছন্দ, প্রাধান্য, মিল, অনুপাত—এই পাঁচটি বিষয়ের দিকে লক্ষ রেখেই ঘরের আসবাব পুনর্বিন্যাস করতে হবে। এমনভাবে আসবাব গুছিয়ে রাখতে হবে, যেন ঘরের চারপাশের সৌন্দর্য মানুষের দষ্টি আকর্ষণ করে।’ ঈদের অন্দর মহলের পরিচর্যা নিয়ে বলছিলেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের গৃহ ব্যবস্থাপনা ও গৃহায়ণ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রীনাত ফওজিয়া।
 ঈদের সময় শুধু আসবাবের স্থান পরিবর্তন কিংবা পুনর্বিন্যাস করলেই চলবে না, পাশাপাশি ঘর পরিষ্কার করে রাখতে হবে, যেন ঈদের দিনে অতিথির দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
 ঈদের কয়েক দিন আগে থেকেই সব ঘরের ঝুল ঝেড়ে ফেলতে হবে। ফ্যান, টিউব লাইট সুন্দর করে মুছে ফেলতে হবে।
 বসার ঘরের সোফাগুলো পরিষ্কার করে রাখতে হবে। যেসব সোফার কভার ধোয়া যায়, সেগুলো ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুতে হবে। আর যেসব সোফার ফোমের ওপর কাপড়ে পেরেক লাগানো থাকে, সেটা আলাদা করে ধোয়া যায় না। সে জন্য বাজারে কিছু পরিষ্কারক ফোমের স্প্রে পাওয়া যায়, তা স্প্রে করে কিছুক্ষণ পর ব্রাশ করলে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
 রট আয়রনের আসবাব হলে নরম কাপড়ের সাহায্যে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
 তিন-চার দিন অগেই বিছানার চাদর, কুশন কভার, বালিশের কভার ধুয়ে ফেলতে হবে।
 ডাইনিং টেবিল-সংলগ্ন চেয়ার নরম কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
 ওয়্যারড্রোবের কাপড় ঝেড়ে গুছিয়ে রাখতে হবে। তবে কাপড়ে যেন পোকা কিংবা কীটপতঙ্গের আক্রমণ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে ন্যাপথলিন, কালো জিরার গুঁড়া, কাপড়ের পোঁটলায় করে নিমপাতা রাখা যেতে পারে কাপড়ের ভাঁজে।
 কাঠের টেবিলের ওপর কখনোই ভেজা জিনিস কিংবা এমন কোনো জিনিস রাখা যাবে না, যাতে টেবিলে দাগ পড়ে যায়।
 ঘরের মেঝে পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে টাইলসের মেঝেয় পানিতে স্যাভলন দিয়ে মুছে ডিটারজেন্ট কিংবা লিকুইড ক্লিনার ব্যবহার করা যেতে পারে।

ঘর সাজানো
‘দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের কারণে ঈদের সময় এখন শুধু মানুষ কাপড়চোপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকে না, নিত্যনতুন বিষয়ের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। ঈদ উপলক্ষে ঘর সাজাতে নতুন বিছানার চাদর, পর্দা, কুশন কভারের ব্যবহার দেখা যায়। উৎসবে ঘর আনন্দময় করে তুলতে হলে ঘরের পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি ঘর সাজানোতেও প্রাধান্য দিতে হবে। ঈদের আগের রাতে কেনা তাজা ফুল দিয়ে সাজানো যেতে পারে ঘরের কোণ। সম্ভব হলে পুরো বাড়িতে নতুন করে রং করে; আসবাবগুলো নতুন করে বার্নিশ করে; ফুলের টবগুলোতে রং করিয়ে অর্থাৎ পুরোনো জিনিসে নতুনের বৈচিত্র্য আনা যায় এই উৎসবমুখর ঈদে।’ বলেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের বস্ত্র-পরিচ্ছদ ও বয়নশিল্প বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সানজিদা হক।
 - নাঈমা আমিন

ঈদের খাবার ও ডায়াবেটিস রোগী

ঈদের খাবার ও ডায়াবেটিস রোগী
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির এন্ডোক্রাইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ফরিদউদ্দিন বলেন, ঈদে মিষ্টিজাতীয় খাবারের প্রাধান্য থাকবেই। কিন্তু ডায়াবেটিক রোগীদের এড়িয়ে চলতে হয় বা কম খেতে হয় ওই মিষ্টিজাতীয় খাবারই। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের ঈদের বেশি সাবধান থাকতে হবে। খাবার খেতে হবে হিসাব করে। এমনিতেই ডায়াবেটিস আক্রান্তদের বারবার ক্ষুধা পায়। নিষেধ বলে স্বভাবতই তারা মিষ্টি খাবারের প্রতি আগ্রহী থাকে। ঈদের মিষ্টি খাবার ও পোলাও-বিরিয়ানি খাবার ফলে তাদের ব্লাড সুগার অনেক বেড়ে গিয়ে ক্ষতির কারণ হতে পারে।

* যাঁদের ব্লাড সুগার শুধু ডায়েট কন্ট্রোল ও ব্যায়ামের মাধ্যমে স্বাভাবিক আছে তাঁরা ঈদের খাবার খেতে পারেন তবে সে ক্ষেত্রে ঈদের দিন সকালে ও বিকেলে ৪০ মিনিট করে হাঁটুন। মসজিদে, কোনো আত্মীয় ও বন্ধুর বাসায় হেঁটে যান।
* যাঁদের ওষুধ খেয়ে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় তাঁরা ওষুধের ডোজ একটু বাড়িয়ে নিতে পারেন। বিশেষ করে সকালে সেমাই-পায়েস খাওয়ার জন্য। তবে দুপুরে এক কাপের বেশি ভাত, পোলাও বা বিরিয়ানি খাবেন না। মনে রাখবেন, ডায়াবেটিসে যতটা না সুগারের সমস্যা তার চেয়েও বেশি লিপিড বা চর্বির সমস্যা। তাই অবশ্যই তৈলাক্ত মাংস, গরুর মগজ, চিংড়ির মাথা ইত্যাদি খাবেন না।
* রাতে অবশ্যই স্বাভাবিক ভাত, রুটি ও সবজি খাবেন। মনে রাখবেন দুই বেলাই ভারি খাবার আপনার জন্য বরাদ্দ নয়।
* যাঁদের ইনসুলিন নিয়ে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় তাঁরা মিষ্টি খাবার একান্তই যদি খেতে চান চিনির পরিবর্তে স্যাকারিন বা এ জাতীয় কিছু ব্যবহার করুন। সবচেয়ে ভালো হয় না খেলে। মাংসের তরকারি, রেজালা, কাবাব ইত্যাদি খেতে পারেন; তবে পরিমাণে অল্প এবং ভাতের সঙ্গে। পোলাও ও বিরিয়ানি পরিহার করাই ভালো হবে। তার পরও ইনসুলিনের ডোজ দুই ইউনিট বাড়িয়ে নিতে পারেন যদি আত্মীয় বা বন্ধুর অনুরোধে একটু বেশি খাওয়া হয়েই যায়।
* যাঁদের ডায়াবেটিসের কারণে নেফ্রোপ্যাথি (কিডনির সমস্যা), রেটিনোপ্যাথি (চোখের সমস্যা) ইত্যাদি আছে, তাঁরা অবশ্যই ঈদের স্পেশাল মেনু পরিহার করবেন, স্বাভাবিক দিনের মতো খাবার খাবেন।

বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১০

ঈদের নামাজ যেভাবে পড়বেন

ঈদের নামাজ যেভাবে পড়বেন

মুফতি মুহাম্মদ ইয়াহইয়া
যেহেতু বছরে মাত্র দু’বার ঈদের নামাজ, তাই এই নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে অনেককেই জটিলতা ও দ্বিধা-সংশয়ে পড়তে হয়। নিম্নে ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম দেয়া হলো। অনেকের ধারণা, নামাজের নিয়ত আরবিতে করা জরুরি। এমনটি ঠিক নয়। যে কোনো ভাষাতেই নামাজের নিয়ত করা যায়। নিয়ত মনে মনে করাই যথেষ্ট। ঈদের দিন ইমামের পেছনে কিবলামুখী দাঁড়িয়ে মনে এই নিয়ত করতে হবে—‘আমি অতিরিক্ত ছয় তাকবিরসহ এই ইমামের পেছনে ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করছি।’ এরপর উভয় হাত কান বরাবর উঠিয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বাঁধতে হবে। হাত বাঁধার পর ছানা অর্থাত্ ‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা’ শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। এরপর আল্লাহু আকবার বলে হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। দ্বিতীয়বারও একই নিয়মে তাকবির বলে হাত ছেড়ে দিতে হবে। ইমাম সাহেব তৃতীয়বার তাকবির বলে হাত বেঁধে আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য যে কোনো সূরা তিলাওয়াত করবেন। এ সময় মুক্তাদিরা নীরবে দাঁড়িয়ে থাকবেন। এরপর ইমাম সাহেব নিয়মমত রুকু-সিজদা সেরে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবেন। মুক্তাদিরা ইমাম সাহেবের অনুসরণ করবেন। দ্বিতীয় রাকাতে ইমাম সাহেব প্রথমে সূরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সূরা পড়বেন। এরপর আগের মতো তিন তাকবির বলতে হবে। প্রতি তাকবিরের সময়ই উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। চতুর্থ তাকবির বলে হাত না উঠিয়েই রুকুতে চলে যেতে হবে। এরপর অন্যান্য নামাজের নিয়মেই নামাজ শেষ করে সালাম ফেরাতে হবে।
ঈদের নামাজ শেষে ইমাম সাহেব খুতবা পাঠ করবেন। মুসল্লিদের জন্য জুমার খুতবার মতো এই খুতবা শোনা ওয়াজিব। খুতবার সময় কথাবার্তা বলা, চলাফেলা করা, নামাজ পড়া সম্পূর্ণরূপে হারাম। কারও ঈদের নামাজ ছুটে গেলে কিংবা যে কোনো কারণে নামাজ নষ্ট হয়ে গেলে পুনরায় একাকী তা আদায় বা কাজা করার কোনো সুযোগ নেই। তবে চার বা তার অধিক লোকের ঈদের নামাজ ছুটে গেলে তাদের জন্য ঈদের নামাজ পড়ে নেয়া ওয়াজিব।

Relaeted Other Islamic Blog

Other Blog-site: