Main Slogan:

হে ইমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর (সূরা বাকারা : ২০৮)
রোজা-সদাকাতুল ফিতর-ঈদ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
রোজা-সদাকাতুল ফিতর-ঈদ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই, ২০২২

আরাফার দিনের রোজা’ কবে রাখব?

- মৌলানা আবু রায়হান বিন মুস্তাক


জিলহজের প্রথম দশ দিন অতি বরকতপূর্ণ। আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে মুমিনদের জন্য বিশেষ উপহার।
এই দশ দিনের আমল ও ইবাদত আল্লাহর কাছে বছরের অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি প্রিয়। কোরআন ও হাদিসের অসংখ্য বর্ণনায় জিলহজের দশ দিনের আমল-ইবাদতের ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
এই দশ দিনের পুরো সময়টাই তো আমলের। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম সব ধরনের আমলই এ সময়ে করতেন। রোজা রাখাও এ সময়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল।
হাদিসে ইয়াওমে আরাফা বা ‘আরাফার দিনের রোজা’ রাখার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ‘আরাফার’ দিনে সিয়াম পালনের ফজিলতের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন- আমি মনে করি, আরাফার দিনে সিয়াম পালনে আল্লাহতায়ালা বিগত বছরের গুনাহ ও আগামী বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। (সহীহ মুসলিম: হাদিস ১১৬২)
হযরত হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিলহজের নবম দিন সিয়াম পালন করতেন এবং সিয়াম পালন করতেন আশুরার দিনে৷ (সুনানে আবু দাউদ, নাসায়ী, মুসনাদে আহমাদ)
বিখ্যাত হাদিস বিশারদ আল্লামা মুবারকপুরী রহ. বলেছেন- হাফসা (রা.)-এর এ বর্ণনায় নবীজি জিলহজের নবম দিন রোজা রাখতেন; এটা সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে এবং এই দিনটিই ‘ইয়াওমে আরাফা’ বা আরাফার দিন। (মিন্নাতুল মুনইম শরহু সহীহ মুসলিম ২/২১১)
উপরোক্ত উভয় হাদিসের বর্ণনায় বিষয়টি স্পষ্ট যে, ‘ইয়াওমে আরাফা’ বা আরাফার দিন হল সব জনপদের নিজ নিজ হিজরি তারিখ হিসেবে ৯ জিলহজ, ৮ জিলহজ নয়! কারণ এই রোজা আরাফা বা আরাফায় অবস্থান সংক্রান্ত আমল নয়।
বরং ৯ তারিখের বিশেষ আমল। কাজেই আমাদের দেশের হিসেবে ৮ জিলহজ সৌদি আরবে হাজীদের আরাফায় অবস্থান হলেও আমরা রোজা রাখব ৯ তারিখেই।
দুই.
‘ইয়াওমে আরাফা’ হচ্ছে ওই তারিখের (৯ জিলহজের) পারিভাষিক নাম।
যেহেতু হজের প্রধান রোকন ‘আরাফায় অবস্থান’ তারিখ হিসাবে ৯ জিলহজে আদায় করা হয়, তাই এ তারিখেরই নাম পড়ে গেছে ‘ইয়াওমে আরাফা’ বা আরাফার দিন।
এ কারণে যেসব আমল আরাফা বা আরাফায় অবস্থানের সঙ্গে বিশেষভাবে সংশ্লিষ্ট নয়; বরং জিলহজের ৯ তারিখের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, সেগুলোকেও ‘ইয়াওমে আরাফা’ বা আরাফার দিনের আমল হিসেবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
তাই ৯ জিলহজের রোজাকে আরাফার দিনের রোজা হিসেবে অভিহিত করা হয়।
তিন.
ইয়াওমে আরাফা বা আরাফার দিন যে ৯ জিলহজ এর আরেকটি দৃষ্টান্ত হলো- ‘তাকবিরে তাশরিক’ সংক্রান্ত হাদিস।
এটি আরাফা বা হাজীদের আরাফায় অবস্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো বিশেষ আমল নয়। এটি শুরু হয় ৯ জিলহজ ফজর থেকে।
অথচ যে দলিল দ্বারা ৯ তারিখ থেকে তাকবিরে তাশরিক শুরু হওয়া প্রমাণিত তাতেও ‘ইয়াওমে আরাফা’ আরাফার দিন শব্দই আছে।
আলী রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন- নবীজি ইয়াওমে আরাফা বা আরাফার দিন (৯ জিলহজ) ফজরের পর থেকে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত তাকবিরে তাশরিক পাঠ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস: ৫৬৭৭)
এখানেও ‘ইয়াওমে আরাফা’ অর্থ ৯ জিলহজ। আর ৮ জিলহজ আরাফার দিনের রোজার প্রবক্তাদের কাছেও তাকবিরে তাশরিক ৯ জিলহজ থেকে শুরু হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত এবং এর স্বপক্ষে দলিলও উপরোক্ত এই হাদিস!
চার.
গোটা মুসলিম উম্মাহর ইজমা আছে যে, ইয়াওমে আরাফার পরের দিনটিই ইয়াওমুন নাহর। হাদিসেও এ ধারাবাহিকতা প্রমাণিত ‌রয়েছে।
এটি প্রমাণ করে, ‘ইয়াওমে আরাফা’ একটি তারিখের নাম। আর তা হচ্ছে ৯ জিলহজ আর ‘ইয়াওমুন নাহর’ও একটি তারিখের নাম। আর তা হচ্ছে ১০ জিলহজ ঈদের দিন।
কারণ আমাদের দেশের হিসেবে ৮ জিলহজকে ইয়াওমে আরাফা মেনে নিলে ইয়াওমে আরাফা ও ইয়াওমুন নাহরের মাঝে আরেকটি দিন স্বীকার করে নেয়া জরুরি। অথচ এটা ইজমার সরাসরি বিরোধী।
সুতরাং বোঝা গেল, এ জাতীয় বিচ্ছিন্ন চিন্তা ও বক্তব্য আরো কিছু ক্ষেত্রেও বিচ্ছিন্নতাকে অনিবার্য করে তুলবে।
কাজেই আমরা বিচ্ছিন্ন কথাকে না মেনে উম্মাহর ঐকমত্য সিদ্ধান্ত মেনে আগামী শনিবার ৯ জিলহজের এই ফজিলত পূর্ণ রোজা রাখার নিয়ত করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বোঝার এবং আমলের তাওফিক দান করুন আমিন।

বুধবার, ১৫ আগস্ট, ২০১২

সদাকাতুল ফিতর সংক্রান্ত জরুরী মাসায়িল



সদাকাতুল ফিতর সংক্রান্ত জরুরী মাসায়িল 
-    মুফতী ইহতিশামুল হক নোমান
প্রয়োজনে: ০১৭১৪৬১৯১৬০

যাদের উপর সাদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব
ক্স    ঈদুল ফিতরের দিন সোবহে সাদেকের সময় যার নিকট যাকাত ওয়াজিব হওয়া পরিমাণ অর্থ/ সম্পদ থাকে তার উপর সদকায়ে ফিতর বা ফেতরা ওয়াজিব। তবে যাকাতের নেসাবের েেত্র ঘরের আসবাবপত্র বা ঘরের মূল্য ইত্যাদি হিসেবে ধরা হয় না; কিন্তু ফেতরার েেত্র অত্যাবশ্যকীয় আসবাবপত্র ব্যতীত অন্যান্য আসবাবপত্র সৌখিন দ্রব্যাদি, খালিঘর বা ভাড়ার ঘর (যার ভাড়ার উপর তার জীবিকা নির্ভরশীল নয়) এসব কিছুর মূল্য হিসেবে ধরা হবে।

ক্স    রোযা না রাখলে বা রাখতে না পারলে তার উপর ফেতরা দেয়া ওয়াজিব।

ক্স    সদকায়ে ফিতর / ফিতরা নিজের প থেকে এবং পিতা হলে নিজের না-বালেগ সন্তানের প থেকে দেয়া ওয়াজিব। বালেগ সন্তান, স্ত্রী, স্বামী, চাকর-চাকরানী, মাতা-পিতা প্রমুখের প থেকে দেয়া ওয়াজিব নয়। তবে বালেগ সন্তান পাগল হলে তার প থেকে দেয়া পিতার উপর ওয়াজিব।

ক্স    একান্নভুক্ত পরিবার হলে বালেগ সন্তান, মাতা, পিতার প থেকে এবং স্ত্রীর প থেকে ফেতরা দেয়া মুস্তাহাব- ওয়াজিব নয়। (বেহেশতী যেওর [বাংলা])

ক্স    সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব না হলেও সঙ্গতি থাকলে দেয়া মুস্তাহাব এবং অনেক সওয়াবের কাজ। (ঐ)

সদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ ঃ
ক্স    ফিতরায় ৮০ তেলার সেরের হিসেবে ১ সের সাড়ে বার ছটাক (১ কেজি ৬৬২ গ্রাম) গম বা আটা কিংবা তার মূল্য দিতে হবে। পূর্ণ দুই সের (১ কেজি ৮৬৬ গ্রাম) বা তার মূল্য দেয়া উত্তম।

ক্স    ফিতরায় যব দিলে ৮০ তোলার সেরের হিসেবে ৩ সের নয় ছটাক (প্রায় ৩ কেজি ৫২৩ গ্রাম) দিতে হবে। পূর্ণ ৪ সের (৩ কেজি ৭৩২ গ্রাম) দেয়া উত্তম।

ক্স    গম, আটা ও যব ব্যতীত অন্যান্য খাদ্য শষ্য যেমন ধান, চাউল, বুট, কলাই, মটর ইত্যাদি দ্বারা ফেতরা আদায় করতে চাইলে বাজার দরে উপরোক্ত পরিমাণ গম বা যবের যে মূল্য হয় সেই মূল্যের ধান চাউল ইত্যাদি দিতে হবে।

ক্স    ফিতরায় গম, যব ইত্যাদি শষ্য দেয়ার চেয়ে তার মূল্য- নগদ টাকা-পয়সা দেয়া উত্তম।

সদাকাতুল ফিতর কখন আদায় করবে

ক্স    ফিতরা ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাযের পূর্বেই দিয়ে দেয়া উত্তম। নামাযের পূর্বে দিতে না পারলে পরে দিলেও চলবে। ঈদের দিনের পূর্বে রমযানের মধ্যে দিয়ে দেয়াও দুরস্ত আছে।

সদাকাতুল ফিতর কাকে দিবে ঃ
ক্স    যাকে যাকাত দেয়া যায় তাকে ফেতরা দেয়া যায়।
ক্স    একজনের ফেতরা একজনকে দেয়া বা একজনের ফেতরা কয়েকজনকে দেয়া উভয়ই দুরস্ত আছে। কয়েক জনের ফেতরাও একজনকে দেয়া দুরস্ত আছে; কিন্তু তার দ্বারা যেন সে মালিকে নেসাব না হয়ে যায়। অধিকতর উত্তম হল একজনকে এই পরিমাণ ফেতরা দেয়া, যার দ্বারা সে ছোট-খাট প্রয়োজন পূরণ করতে পারে বা পরিবার পরিজন নিয়ে দু’তিন বেলা খেতে পারে। (মাও: হেমায়েতুদ্দীনকৃত আহকামে যিন্দেগী: ২৩২-২৩৩)

সদাকাতুল ফিতর আদায় সংক্রান্ত একটি পর্যালোচনা ঃ
সদকায়ে ফিতর সম্পর্কিত হাদীসগুলো পর্যালোচনা করলে এ বিষয়ে মোট পাঁচ প্রকার খাদ্যের বর্ণনা পাওয়া যায়। যব, খেজুর, পনির, কিসমিস ও গম। এ পাঁচ প্রকারের মধ্যে যব, খেজুর, পনিরও কিসমিস দ্বারা সদকা ফিতর আদায় করতে চাইলে প্রত্যেকের জন্য এক সা’ দিতে হবে। আর গম দ্বারা আদায় করতে চাইলে আঁধা সা’ দিতে হবে। এটা হল ওজনের দিক দিয়ে তফাত। আর মূল্যের দিক থেকে তো পার্থক্য রয়েছেই। যেমন-
(ক)    আজওয়া (উন্নতমানের) খেজুরের মূল্য প্রতি কেজি ১০০০/- টাকা হলে একজনের সদকায়ে ফিতর দাঁড়ায় ৩২৫৬/- (তিন হাজার দুইশত ছাপান্ন) টাকা।

(খ)    মধ্যম ধরনের খেজুর যার মূল্য প্রতি কেজি ৩০০/- টাকা হারে একজনের সদকায়ে ফিতর দাঁড়ায় ৯৭৭/- (নয়শত সাতাত্তর) টাকা।

(গ)    কিসমিস প্রতি কেজি ২৩০/- টাকা করে হলে একজনের সদকায়ে ফিতর দাঁড়ায় ৭৪৮/- (সাতশত আটচলি­শ) টাকা।

(ঘ)    পনির প্রতি কেজি ৫০০/- (পাঁচশত) টাকা করে ধরা হলে একজনের সদকায়ে ফিতর দাঁড়ায় ১৬২৮/- (এক হাজার ছয়শত আটাশ) টাকা।

(ঙ)    গম প্রতি কেজি ৩৫/- টাকা হিসেবে ধরা হলে একজনের সদকায়ে ফিতরা দাঁড়ায় ৫৭/- টাকা।

হাদীসে এ ৫টি দ্রব্যের যে কোনটি দ্বারা ফিতরা আদায়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে যেন মুসলমানগণ নিজ নিজ সামর্থ্য ও সুবিধা অনুযায়ী এর যে কোনো ১টি দ্বারা তা আদায় করতে পারে। এখন ল্যণীয় বিষয় হল, সকল শ্রেণীর লোক যদি সবচেয়ে নিম্ন মূল্য-মানের দ্রব্য দিয়েই নিয়মিত সদকা আদায় করে তবে হাদীসে বর্ণিত অন্য চারটি দ্রব্যের হিসেবে ফিতরা আদায়ের উপর আমল করবে কে? আসলে এেেত্র হওয়া উচিত ছিল এমন যে, যে ব্যক্তি উন্নতমানের আজওয়া খেজুরের হিসাবে সদকা ফিতর আদায় করার সামর্থ্য রাখে সে তা দিয়েই আদায় করবে। যার সাধ্য পনিরের হিসাবে দেওয়ার সে তাই দিবে। এর চেয়ে কম আয়ের লোকেরা খেজুর বা কিসমিসের হিসাব গ্রহণ করতে পারে। আর যার জন্য এগুলোর হিসাবে দেওয়া কঠিন সে আদায় করবে গম দ্বারা। এটিউ উত্তম নিয়ম। এ নিয়মই ছিল নবী, সাহাব, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈনের স্বর্ণযুগে। এ পর্যন্ত কোথাও দুর্বল সূত্রে একটি প্রমাণ মেলেনি যে, স্বর্ণযুগের কোনো সময়ে সব শ্রেণীর সম্পদশালী সর্বনিম্ন মূল্যের দ্রব্য দ্বারা সদকা ফিতর আদায় করেছেন। এখানে এ সংক্রান্ত কিছু বরাত পেশ করা হচ্ছে।

হাদীস
নবী কারীম সাল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামকে সর্বোত্তম দান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি ইরশাদ করেন-

‘দাতার নিকট যা সর্বোৎকৃষ্ট এবং যার মূল্যমান সবচেয়ে বেশি।’- সহীহ বুখারী, কিতাবুল ইতাক ৩/১৮৮; সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ঈমান বাব আফযালুল আমল ১/৬৯।

সাহাবায়ে কিরাম এর আমল
(ক) হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রা) বলেন,
‘আমরা সদকা ফিতর আদায় করতাম এক ‘সা’ খাদ্য দ্বারা অথবা এক ‘সা’ যব অথবা এক ‘সা’ খেজুর কিংবা এক ‘সা’ পনির বা এক ‘সা’ কিসমিস দ্বারা। আর এক ‘সা’ এর ওজন ছিল নবী কারীম সাল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম- এর ‘সা’ অনুযায়ী।- মুয়াত্তা মালেক পৃ. ১২৪. আল ইসতিযকার, হাদীস: ৫৮৯, ৯/৩৪৮
এ হাদীসে রাসূলের যুগে এবং সাহাবাদের আমলে সদকা ফিতর কোন কোন বস্তু দ্বারা আদায় করা হত তার সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে।

(খ) হযরত আব্দুল­াহ ইবনে ওমর (রা) সারা জীবন খেজুর দ্বারাই সদকা ফিতর আদায় করেছেন। তিনি একবার মাত্র যব দ্বারা আদায় করেছেন।- আলইসতিযকার, হাদীস: ৫৯০, ৯/৩৫৪

ইবনে কুদামা (রা) আবূ মিজলাযের বর্ণনা উলে­খ করে বলেন, এ বর্ণনা দ্বারা বোঝা যায় যে, সাহাবায়ে কেরাম অধিকাংশই যেহেতু খেজুর দ্বারা ফিতরা আদায় করতেন তাই ইবনে ওমর (রা) সাহাবীদের তরীকা অবলম্বন করতে সারা জীবন খেজুর দ্বারাই আদায় করেছেন। এ প্রসঙ্গে ইবনে ওমরের ভাষ্য হল-

‘সাহাবাগণ যে পথে চলেছেন, আমিও সে পথেই চলতে আগ্রহী।’
এবার দেখা যাক মাযহাবের ইমামগণ উত্তম সদকা ফিতর হিসেবে কোনটিকে গ্রহন করেছেন।

উত্তম সদকা ফিতর
ইমাম শাফেয়ীর মতে উত্তম হল হাদীসে বর্ণিত বস্তুর মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট ও সর্বোচ্চ মূল্যের দ্রব্য দ্বারা সদকা দেওয়া। অন্য সকল ইমামের মতও এমনই ইমাম মালিক (রহ) এর নিকট খেজুরের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত খেজুর ‘আজওয়া’ খেজুর দেওয়া উত্তম। আজওয়া খেজুরের ন্যূনতম মূল্য ১০০০-১২০০ টাকা প্রতি কেজি।

ইমাম আহমদ (রহ) এর নিকট সাহাবায়ে কেরামের অনুসরণে খেজুর দ্বারা ফিতরা আদায় করা ভালো।- আল মুগনী ৪/২১৯; আওজাযুল মাসালিক ৬/১২৮।

ইমাম আবু হানীফা (রহ) এর নিকটেও অধিক মূল্যের দ্রব্যের দ্বারা ফিতরা আদায় করা ভালো। অর্থাৎ যা দ্বারা আদায় করলে গরীবের বেশি উপকার হয় সেটাই উত্তম ফিতরা।

সাহাবায়ে কেরামের যুগে আধা ‘সা’ গমের মূল্য এক ‘সা’ খেজুরের সমপরিমাণ ছিল। নবী কারীম সাল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম এর যুগে মদীনাতে গমের ফলন ছিল না বললেই চলে। পরবর্তীতে হযরত মুআবিয়া (রা) এর যুগে ফলন বৃদ্ধি পেলেও মূল্য ছিল সবচেয়ে বেশি। একাধিক বর্ণনায় এসেছে যে, সেকালে আধা ‘সা’ গমের মূল্য এক ‘সা’ খেজুরের সমপরিমাণ ছিল।

হযরত মুআবিয়া (রা) এর যুগে গমের ফলন বৃদ্ধি পেলে আধা ‘সা; গমকে সদকা ফিতরের অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের এক ‘সা’র মতো গণ্য করা হত।- আল ইসতিযকার ৯/৩৫৫।

ইবনুল মুনযির বলেন-

সাহাবীদের যুগে যখন গম সহজলভ্য হল তখন তারা আধা ‘সা’ গমকে এক ‘সা’ যবের সমতুল্য গণ্য করলেন।- ফাতহুল মুলহিম ৩/১৫; আওজাযুল মাসালিক ৬/১৩।

তাহলে বুঝা গেল যে, হযরত মুআবিয়া (রা) এর যুগে গম দ্বারা সদকা ফিতর আদায়ের প্রচলন বেড়েছিল। এর কারণ হল যে, তখন গমই ছিল সর্বোৎকৃষ্ট ও সর্বোচ্চ মূল্য মানের খাদ্য। এ সময় হযরত ইবনে ওমর সাহাবাদের অনুকরণে খেজুর দ্বারাই সদকা ফিতর আদায় করতেন। তখন তাঁকে আবূ মিজলায (রহ) বললেন-

‘আল­াহ তাআলা তো এখন সামর্থ্য দিয়েছেন। আর গম খেজুরের চেয়ে অধিক উত্তম। অর্থাৎ আপনার সামর্থ্য রয়েছে বেশি মূল্যের বস্তু সদকা করার। তবুও কেন খেজুর দ্বারা তা আদায় করছেন? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, আমি সাহাবাদের অনুকরণে এমন করছি।
যাক, আমাদের কথা ছিল, সাহাবায়ে কিরাম গম দ্বারা এ জন্যই সদকা ফিতর আদায় করতেন যে, এর মূল্য সবচেয়ে বেশি ছিল। হাদীসে পাঁচ প্রকারের খাদ্য দ্রব্যের মধ্যে বর্তমানে গমের মূল্য সবচেয়ে কম। তাহলে এ যুগে সর্ব শ্রেণীর জন্য এমনকি সম্পদশালীদের জন্যও শুধুই গম বা তার মূল্য দ্বারা সদকা ফিতর আদায় করা কী করে সমীচীন হতে পারে?
বড়ই আশ্চর্য! পুরো দেশের সব শ্রেণীর লোক বছর বছর ধরে সর্বনিম্ন মূল্যের হিসাবে ফিতরা আদায় করে আসছে। মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত সকলেই ফিতরা দিচ্ছে একই হিসাবে জনপ্রতি ৫৫/৬০ টাকা করে। মনে হয় সকলে ভুলেই গেছে যে, গম হচ্ছে ফিতরার ৫টি দ্রব্যের একটি (যা বর্তমানে সর্বনিম্ন মূল্যের)।

সুতরাং আমরা এদেশের ফিতরা আদায়কারী ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি আহŸান জানাচ্ছি তারা যেন যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী হাদীসে বর্ণিত দ্রব্যগুলোর মধ্যে তুলনামূলক উচ্চমূল্যের দ্রব্যটির হিসাবে ফিতরা আদায় করেন। পনির, কিসমিস, খেজুর কোনোটির হিসাব যেন বাদ না পড়ে। ধনীশ্রেণীর মুসলিম ভাইদের জন্য পনির বা কিসমিসের হিসাবে ফিতরা আদায় করা কোনো সমস্যাই নয়। যেখানে রমযানে ইফতার পাটির নামে ল ল টাকা ব্যয় করা হয়, ঈদ শপিং করা হয় অঢেল টাকার, সেখানে কয়েক হাজার টাকার ফিতরা তো কোনো হিসাবেই পড়ে না। যদি এমনটি করা হয়, তবে যেমনিভাবে পুরো হাদীসের উপর মুসলমানদের আমল প্রতিষ্ঠিত হবে এবং একটি হারিয়ে যাওয়া সুন্নত যিন্দা করা হবে, তেমনি এ পদ্ধতি দারিদ্রবিমোচনে অনেক অবদান রাখবে। গরীব- দুঃখীগণের মুখেও হাসি ফুটে উঠবে ঈদের পবিত্র দিনে।

আরেকটি আবেদন ইসলামিক ফাউন্ডেশন, দেশের সম্মানিত মুফতীগণ, মাশায়েখ হযরত ও দারুল ইফতাগুলোর কাছে, তারা যেন সদকাতুল ফিতর এর পরিমাণ ঘোষণা দেওয়ার সময় হাদীসে বর্ণিত সকল দ্রব্যের হিসাবেই পৃথক পৃথকভাবে বলে দেন এবং মানুষকে যথাসম্ভব উচ্চমূল্যের ফেতরা আদায়ের প্রতি উৎসাহিত করেন। আল­াহ তাআলা আমাদের তাওফীক দিন।

বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১

রমজান থেকে কী পেলাম

রমজান থেকে কী পেলাম

লেখক: মাওলানা লুত্ফর রহমান ইবনে ইউসুফ | বুধ, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১১

মহাপবিত্র মাহে রমজান, বেহেশতী মেহমান। এ মাসেই অবতীর্ণ হয়েছে মহান আল্লাহ তাআলার নির্দেশনায় মহাগ্রন্থ, মহাপবিত্র আল-কুরআন। যাতে রয়েছে মু’মিন মুসলিমদের আত্মশুদ্ধির জন্য তাকওয়া অর্জন ও ধৈর্য ধারণের পাথেয় হিসেবে মহাকল্যাণময় ‘সিয়াম’ সাধনা আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ বিধান। এ বিধান যারা সুষ্ঠুভাবে পালন করেছে তাদের দ্বারাই অর্জিত হয়েছে আত্মশুদ্ধির উপায় হিসেবে তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতি এবং ধৈর্যের সোপান। এরাই হচ্ছে মহাভাগ্যবান মহান আল্লাহ তাআলার মুত্তাকী বান্দা। এদের জন্যই মহাপুরস্কার হিসেবে অসীম দয়াময় ও দয়াবান মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেছেন, চিরসুখের, মহা আনন্দের, জান্নাতের অফুরন্ত নেয়ামতের কথা ও তাদের আরামের আসবাবপত্রের ও সুখশয্যার বর্ণনা।
মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, “নিশ্চয়ই সাফল্যমণ্ডিত সে, যে পবিত্র (যার আত্মা বিশুদ্ধ), (সূরা আলা-০৯) তিনি তার মুত্তাকী বান্দাদের সম্পর্কে আরো বলেন, ‘মুত্তাকীদের জন্য আছে সাফল্য. বাগানসমূহ ও আঙ্গুরসমূহ, সমবয়স্ক উদীপ্ত যৌবনা তরুণী এবং পরিপূর্ণ পানপাত্র।” (সূরা-নাবা-৩১-৩৪)
আরো ইরশাদ হচ্ছে “তোমরা প্রতিযোগিতা কর, স্বীয় প্রতিপালকের নিকট থেকে ক্ষমা এবং জান্নাতের জন্য, যার প্রশস্ততা ‘আসমান ও যমীনের সমান’ যা মুত্তকী বা আল্লাহভীরু বান্দাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।” প্রকৃত রোজাদাররাই মুত্তাকী হিসেবে ভূষিত। কেননা তারা ঈমান ও সওয়াবের আশায় এ কাজ সম্পন্ন করেছেন। তার মহাপ্রভু মহান আল্লাহর ভয়ে রোজা রেখে সকল পাপ ও পাপকার্য ত্যাগ করে। তাই এর প্রতিদান আল্লাহ নিজ হাতে দেবেন। সুতরাং রোজার প্রকৃত মূল্য মানুষ ধারণা করতে অক্ষম। রোজার বিনিময়ে এরচেয়ে বড় পাওনা আর হতে পারে না যেখানে প্রিয় নবী (স.) ঘোষণা করেছেন, যে লোক রমজান মাসের রোজা রাখবে ঈমান ও সওয়াবের আশায় তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (সহীহ বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ)
নবী করীম (স.) আরো বলেছেন, এটা ধৈর্যের মাস এবং ধৈর্যের ফল হচ্ছে জান্নাত। (বায়হাকী)
মাহে রমজানের আগমনের ফলে পৃথিবীতে আল্লাহর রহমত অবারিতভাবে বর্ষিত হতে থাকে। যারাই রোজা রেখেছে, এরা সকলেই আল্লাহর রহমত, মাগফেরাত ও নাজাত বা মুক্তির নহরে অবগাহন করেছে। এরচেয়ে পাওয়া আর কী হতে পারে।
মজুর যেমন সারাদিন কাজ করার পর আপন মালিকের নিকট হতে মজুরি পেয়ে যায়, ঠিক তেমনিভাবে মহান আল্লাহ তাআলা তার খালেছ বান্দা এবং নিখুঁত রোজাদারকে রমজান শেষে নিষ্পাপ করে দেন। এই প্রাপ্তি ও শিক্ষা অনুযায়ী সামনের দিনগুলিতে আমাদের চলতে হবে।

শাওয়ালের ছয়টি সুন্নত রোজার মাহাত্ম্য

শাওয়ালের ছয়টি সুন্নত রোজার মাহাত্ম্য

লেখক: মুফতি মুফীযুর রাহমান কাসেমী | বুধ, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১১

মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তারই ইবাদতের জন্য। এ মহান সৃষ্টি দ্বারা তার আর কোন উদ্দেশ্য নেই। তিনি চান বান্দা যেন সর্বদা আমারই ইবাদত করে। আমাকেই তার আপন ভাবে। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে মহান প্রভু ইরশাদ করেছেন, এবং আমি জিন ও মানবজাতিকে একমাত্র আমারই ইবাদতের জন্য তৈরি করেছি (আল-কুরআন)।
এই মানবজাতি যেন তাদের বাস্তব জীবনে একে অন্যকে আপন ভেবে একে অন্যের দ্বারা উপকৃত হতে পারে এজন্য দিয়ে দিয়েছেন জীবন বিধান। সামাজিক জীবনে তারা পরস্পরে যেন ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে সেজন্য কুরআন হাদিসে মানবসেবার অনেক ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে।
রাসূলে কারীম (সা.) ইরশাদ করেছেন:যে ব্যক্তি দুনিয়ার বুকে কোন মুমিন ব্যক্তির পেরেশানী/বিপদাপদ দূর করবে আখেরাতের বুকে আল্লাহ পাক তার পেরেশানী/বিপদাপদ দূর করে দিবেন। আর যে কোন মুসলমানের দোষ-ত্রুটিকে গোপন রাখবে আল্লাহ পাক ইহকাল ও পরকালে তার দোষ-ত্রুটিকে গোপন রাখবেন। আর যতক্ষণ পর্যন্ত কোন ব্যক্তি তার অপর ভাইয়ের সহযোগিতায় লিপ্ত থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ পাক তাকে তার সহযোগিতা দ্বারা বেষ্টন করে রাখবেন (আল-হাদিস)।
উক্ত হাদিসে রসূল (স.) মানবসেবার ফজিলতকে বর্ণনা করেছেন। আর এ দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল মানবসেবা অনেক ফজিলতের কাজ।
অন্য এক হাদিসের মধ্যে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন: যারা অন্যের উপর দয়া করে মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন তাদের ওপর দয়া করেন। তোমরা পৃথিবীর বুকে যারা রয়েছো তাদের প্রতি দয়া কর। আকাশের অধিবাসী (মহান প্রভু) তোমাদের ওপর দয়া করবেন। (আল-হাদিস)
উক্ত হাদিসের মধ্যে ঐদিকে ইশারা করা হয়েছে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত কারো হূদয়ে সৃষ্ট জীবের প্রতি দয়া হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত সে ব্যক্তি তাকে মুসলমান বলে দাবি করার অধিকার রাখে না। একজন মুমিনের জীবন এই সমস্ত গুণে গুণান্বিত হওয়া উচিত। কেননা পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক এই জাতিকে লক্ষ্য করে বলেছেন: এবং আমি বনী আদমকে সম্মানিত করেছি। (আল-কুরআন)
আবার অন্যত্র আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন: এরা হল চতুষ্পদ প্রাণীর ন্যায়, বরং এরচেয়েও আরো নিকৃষ্ট। (আল-কুরআন) আল্লাহ পাকের ভাষায়ই মানবজাতি সম্মানিত। আবার এরাই তার ভাষায় চতুষ্পদ প্রাণীর চেয়েও নিকৃষ্ট। তাই তো মানবজাতি আল্লাহর নিকট প্রকৃত সম্মানিত ও প্রিয়পাত্র হবে তখনই যখন তাদের জীবনের প্রতিটি কর্ম হবে একমাত্র তারই জন্য। সুখে-দুঃখে একমাত্র তারই ইবাদত করবে। তাকেই ভালোবাসবে। তারই নৈকট্য লাভের চেষ্টায় সর্বদা ব্যস্ত থাকবে। আর নফল রোযার দ্বারা আল্লাহ পাক অতি সহজেই বান্দাকে তার কাছে টেনে নেন। হাদিসে এসেছে হযরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত: তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন: নিশ্চয় তোমাদের প্রভু বলেন! প্রত্যেক নেক আমলের প্রতিদান দশ থেকে নিয়ে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি হয়ে থাকে। আর রোযা হল (এমন একটি ইবাদত) একমাত্র আমারই জন্য এবং আমি নিজেই এর প্রতিদান দিয়ে থাকি। আর রোযা হল জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য ঢালস্বরূপ এবং রোযাদার ব্যক্তির মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহ পাকের নিকট মেশক আম্বরের সুঘ্রাণের চেয়েও অধিক শ্রেষ্ঠতর (আল- হাদিস)।
অন্য হাদিসে এসেছে:হযরত সাহল ইবনে সা’দ (রা.) সূত্রে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন জান্নাতের মধ্যে একটি দরজা রয়েছে, যার নাম হল ‘রাইয়্যান’। একমাত্র রোযাদারদেরকেই সেই দরজা দিয়ে আহ্বান করা হবে। সুতরাং রোযাদারই সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। অতএব, সেথায় যে প্রবেশ করে ফেলবে সে কখনো তৃষ্ণার্ত হবে না (আল-হাদিস)।
অন্য হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে: হযরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন! রোযাদারের জন্য দু’টি আনন্দ রয়েছে— একটি হল যখন সে ইফতার করে। আর অপরটি হল যখন সে তার মহান প্রভুর সাথে সাক্ষাত্ করবে (আল-হাদিস)।
মুসলমান ব্যক্তি যাতে শুধু রমযানের রোযা রেখে থেমে না যায়, বরং সে কি করে সহজেই পূর্ণ বছরটা মহান প্রভুর ভালোবাসার পাত্র হয়ে থাকতে পারে এবং কি করে জান্নাতের স্থায়ী বাসিন্দা হতে পারে। কেয়ামতের ভয়াবহ দিবসেও সে কি করে হাসতে পারে। থাকতে পারে আনন্দের সাথে। রাসূল (সা.) উম্মতের সামনে এই পথটি স্পষ্ট করে দিয়ে গেছেন।
হাদিস শরীফে এসেছে:হযরত আবু আইয়ূব (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন! যে ব্যক্তি রমযানের রোযা রাখল অতঃপর তার সাথে সাথে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোযা রাখল সে যেন পূর্ণ বছরই রোযা রাখল (আল-হাদিস)। অর্থাত্, একজন ব্যক্তি যখন রমযান মাসের রোযা রেখে তার সাথে সাথে শাওয়াল মাসেও ছয়টি রোযা রাখল সে এই রোযার কারণে আল্লাহ পাকের দরবারে পূর্ণ একটি বছর রোযা রাখার সমান সওয়াব পেয়ে গেল। একটু ভেবে দেখুন, রমযানের পরবর্তী মাস শাওয়ালের মধ্যে ছয়টি রোযা রাখার এই আমলটা কতই না সহজ, কিন্তু তার ফজিলত কতই না মহান। কার পক্ষে সহজেই সম্ভব এক বছর লাগাতার রোযা রাখা। অথচ এই আমলটা এই ফজিলত সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও তা সাধারণ মানুষের পক্ষেও সম্ভব। শুধু মনের সত্ নিয়তই যথেষ্ট। বান্দা যখন প্রকৃতভাবে আল্লাহকেই ভালোবাসে তখন তার জন্য একদম কঠিন থেকে কঠিনতম আমলও সহজ হয়ে দাঁড়ায়। বান্দা যখন আল্লাহ পাকের দিকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে অগ্রসর হয় আল্লাহ পাকের রহমত তার দিকে দৌড়িয়ে অগ্রসর হয়। বান্দা যখন আল্লাহ পাকের প্রেমে বিভোর হয়ে তার সন্তুষ্টির লক্ষ্যে সামান্যতম আমল তার দরবারে পেশ করে আল্লাহ পাক বান্দার এই আমলকে দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ পাকের এই দয়া ও অনুগ্রহ বান্দা তখনই লাভ করবে যখন বান্দা আমল করবে। কেননা আল্লাহ পাকের রহমত লাভের জন্য একটি ওছিলা আবশ্যক। আর তা হল আমল। তাই তো বান্দা যেন আল্লাহ পাকের রহমতকে হাতছাড়া না করে।
অন্য একটি হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে: রসূল (স.)কে সারা বছর রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে তোমার ওপর তোমার পরিবার-পরিজনের হক বা অধিকার রয়েছে। অতঃপর তিনি বললেন, রমযানের এবং তার পরবর্তী দিনগুলোরও প্রত্যেক বুধবার ও বৃহস্পতিবারে রোযা রাখ। সুতরাং যখন তুমি এই রোযাগুলো রাখবে তখন যেন তুমি সারাটা বছরই রোযা রাখলে।(আল-হাদিস)
এই সমস্ত আরো অনেক হাদিস রয়েছে, যার দ্বারা শাওয়ালের ছয়টি রোযা রাখার ফযীলত প্রমাণিত হয়। সুতরাং আসুন আমরা এই মহান ফজিলত ও বরকতময় আমলটি নিজ জীবনে বাস্তবায়িত করি। তাহলেই সফল হবে আমাদের ইহকাল ও পরকাল। আল্লাহ পাক আমাদেরকে সেই তাওফীক দান করুন। আমীন।

ঈদুলফিতরের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য

ঈদুলফিতরের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য

লেখক: মাওলানা জাকির হোসাইন আজাদী | বুধ, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১১,


এক মাস সিয়াম সাধনার পর সমগ্র মুসলিম বিশ্বে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আনন্দের হিল্লোল প্রবাহিত হয়। রমজান শেষ হলে ঈদুল ফিতরের রাতটি খুবই মাহাত্মপূর্ণ। যেমন রসূলুল্লাহ (স.) বলেন ঃ যে ব্যক্তি দু’ঈদের নেকীর আশাধারী হয়ে সালাতে দাঁড়াবে তার হূদয় সেদিন মরবে না যেদিন অনেক মানুষ মনমরা হয়ে থাকবে। (ইবনে মাজাহ, তালখীসুল হাবীব ১৪৩ পৃঃ, কানযুল উম্মাল ১৯৮ পৃঃ)
বিখ্যাত তাবেঈ আল্লামা মুজাহিদ (রহ.) বলেন, রমজানের শেষ দশকের রাতের মত ঈদুল ফিতরের রাতও মাহাত্ম্যপূর্ণ এ কারণেই মনে হয় এই প্রসিদ্ধ তাবেঈ (কারো মতে সাহাবী) আবদুর রহমান ইবনে আসওয়াদ বলেন, ঈদুল ফিতরের রাতে অন্যান্যদের মত দুনিয়াবী রং ঢংয়ে রোজা পালনকারীদের মজে থাকা কোন মতেই চলবে না। বরং পারতপক্ষে ঐ রাত নফল ইবাদাতে কাটানো উচিত।
আল্লামা হাফিয ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) বলেন, একথা বর্ণিত আছে যে, রসূলুল্লাহ (স.) সর্বপ্রথম যে ঈদের সালাত পড়েন তা হল দ্বিতীয় হিজরীতে। তারপর থেকে তিনি দুনিয়া ত্যাগ করা পর্যন্ত আজীবন দু’ঈদের সালাত পড়েন। (তালখীসুল হাবীর ১৪২ পৃঃ)
রসূলূল্লাহ (স.) দু’ঈদের দিনে গোসল করতেন। (ইবনে মাজা ৯৪পৃঃ) তারপর তিনি সবচেয়ে সুন্দর কাপড় পরতেন। কখনো তিনি সবুজ রংয়ের চাদর পরতেন। (নাসাঈ ১ম খণ্ড-১৭৮পৃঃ) আবার কখনো লাল ফুলের বুটি দেয়া চাদর পরতেন।(যাদুল মা’আদ ১ম খণ্ড-১২১পৃঃ) জাবির (রা.) বলেন, দু’ঈদে ও জুমআতে নবী (স.)তাঁর লাল বুটি দেয়া বিশেষ চাদরটি পরতেন। (ইবনে খুযায়মা, নায়লুল আওতার ৩য় খণ্ড -১৬৬ পৃঃ) প্রত্যেক ঈদে তিনি এক বিশেষ ইয়েমেনী চাদর পরতেন। (কিতাবুল উম্ম ২০৬ পৃঃ) তারপর তিনি সর্বোত্তম খুশবু লাগাতেন। (হাকিম, ফতহুল আল্লাম ১ম খণ্ড -২২১পৃঃ) তিনি বেজোড় খেজুর খেয়ে ঈদুল ফিতরের জন্য সকালে ঘর থেকে বের হতেন। (বুখারী ১৩০ পৃঃ) এবং ঈদুল আযহার দিনে সালাত না পড়া পর্যন্ত কিছু খেতেন না। (তিরমিযী ১ম খণ্ড-৭১ পৃঃ ইবনে মাজাহ, মিশকাত ১২৬ পৃঃ) আলী (রা.) বলেন, সুন্নাত হল ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া। (তিরমিযী ১ম খণ্ড-৬৯পৃঃ বুলুগুল মারাম ৩৫ পৃঃ) তাই তিনি হেঁটে ঈদগাতে যেতেন এবং হেঁটেই বাড়ী ফিরতেন। (ইবনে মাজাহ ৯৩) তিনি এক রাস্তা দিয়ে ঈদগাহে যেতেন এবং অপর রাস্তা দিয়ে বাড়ী ফিরতেন। (ইবনে খুযায়মা ২য় খন্ড, ৩৪৩ পৃঃ) এবং ঘর থেকে ঈদগাহ পর্যন্ত তিনি তাকবীর দিতে দিতে যেতেন। (হাকিম, তালখীসুল হাবীর, ১৪২ পৃঃ)
আবূ সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন, নবী (স.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে ঈদগাহে যেতেন। (বুখারী, ১৩১ পৃঃ, মুসলিম ১ম খণ্ড-২৯০ পৃঃ, মিশকাত ১২৫পৃঃ)
আবূ হুরায়রাহ (রা.) বলেন, একবার বৃষ্টি হওয়ায় নবী (স.) সবাইকে নিয়ে মসজিদে ঈদের সালাত পড়েন। (আবু দাঊদ ১ম খণ্ড-১৬৪ পৃঃ ইবনে মাজাহ ৯৪পৃঃ, মিশকাত ১২৫পৃঃ)
উক্ত দু’টি হাদীস প্রমাণ করে যে, কোন এক মাঠেই ঈদের সালাত পড়া উত্তম ও সুন্নাত। তবে বৃষ্টি হলে এবং মাঠে সালাত পড়া সম্ভব না হলে মসজিদে ঈদের সালাত পড়া যাবে।
ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত নবী (স.) ঈদের দিন দু’ রাকআত সালাত পড়েন। তার আগে এবং পরে কোন সালাতই তিনি পড়েননি। (সিহাহ সিত্তা ও মুসনাদে আহমাদ, বুলুগুল মারাম- ৩৫পৃঃ) একদা ওয়াসিলাহ ঈদের দিনে রসূলূল্লাহ (স.) এর সাথে সাক্ষাত করে বলেন, ‘আল্লাহ আমাদের এবং আপনার তরফ থেকে ঈদকে কবূল করুন। তখন তিনি বললেন, হ্যাঁ। তাকাব্বালাল্লা-হু মিন্না ওয়া মিনকা। (ইবনে আদী) রসূলুল্লাহ (স.) এর সাহাবীগণ যখন ঈদের দিন সাক্ষাত করতেন তখন একে অপরকে বলতেন তাকাব্বালাল্লা-হু মিন্না ওয়া মিনকা। (ফতহুল বারী ২য় খণ্ড-৪৪৬ পৃঃ) রসূলূল্লাহ (স.) ঈদগাহে যাবার সময় একটা লাঠি বা বল্লম নিয়ে যেতেন এবং সালাত শুরুর আগে সেটা তাঁর সামনে সুতরা হিসেবে ব্যবহার করতেন। (বুখারী ১৩৩ পৃঃ) অতঃপর তিনি আল্লাহু আকবার বলে তাকবীরে তাহরীমা বলে হাত বাঁধতেন। তারপর তিনি সানা পড়তেন। (ইবনে খুযায়মা)
নু’মান বিন বাশীর (রা.) বলেন, রসূলূল্লাহ (স.) দু’ ঈদের ও জুমআতে সূরা সাব্বিহিসমা রব্বিকাল আ’লা (সূরা-আ’লা) ও হাল আতা-কা হাদীসুল গাশিয়াহ (সূরা গাশিয়া) পড়তেন। আর যখনই ঈদ ও জুম’আএক দিনে পড়তেন তখনও তিনি ঐ সূরা দু’টিকে উক্ত দুই সালাতেই পড়তেন। (মুসলিম ১ম খণ্ড ২৮৮পৃঃ)
রসূলূল্লাহ(স.) ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরের দিনে সূরা কাফ ও সূরা কামার পড়তেন। (মুসলিম ১ম খণ্ড ২৯১পৃঃ, আবূ দাঊদ ১ম খণ্ড ৬২ পৃঃ, শিকাত -৮০পৃঃ)
আবূ সাঈদ খুদরী (র.) বলেন, নবী (স.) ঈদুল ফিতর ও আযহার দিনে ঈদগাহের দিকে রওয়ানা হতেন। অতঃপর প্রথম কাজ সালাত আদয় করতেন। তারপর সালাম ফিরে লোকেদের দিকে মুখ করে দাড়াতেন। তখন সব লোকেরা লাইন দিয়ে বসে থাকতো। অতঃপর তিনি তাঁদেরকে ওয়াজ ও নসীহাত করতেন এবং কোন কাজের নির্দেশ দিতেন। তারপর বাড়ী ফিরতেন। (বুখারী ১৩১পৃঃ মুসলিম ১ম খণ্ড-২৯০ পৃঃ, মিশকাত-১২৫পৃঃ, নাসাঈ ১ম খণ্ড-১৭৯পৃঃ)
ইবনে আব্বাসের (রা.) বর্ণনায় আছে যে, পুরুষদের সামনে নাসিহত করার পর রাসুলুল্লাহ (স.) মেয়েদের নিকটে যেতেন এবং তাদেরকেও ওয়াজ ও নসিহত করতেন এবং দান খয়রাত করার হুকুম দিতেন। তখন মেয়েরা তাদের কানের ও হাতের গহনা খুলে বেলালের মাধ্যমে রসূলূল্লাহ (স.) এর কাছে পাঠাতেন। (বুখারী ১৩১ পৃঃ, মুসলিম ১ম খণ্ড-২৮৯ পৃঃ, মিশকাত ১২৫ পৃঃ)
এ হাদীস প্রমাণ করে যে, পুরুষদের সামনে ঈদের যে নসীহাত হয় তার আওয়াজ যদি নারী মুসল্লীরা শুনতে না পায়, তাহলে ইমামের উচিত পুরুষদের খুত্বা শেষ করে মেয়েদের কাছে গিয়ে কিছু বক্তব্য পেশ করা। ইমাম নবনী (রহ.) বলেন, খতীবের উচিত ঈদুল ফিতরের খুত্বায় শ্রোতাদেরকে ফিতরার নিয়মনকানুন শেখানো এবং ঈদুল আজহার খুত্বায় কুরবানীর বিধান শেখানো। (রওযাতুত তা-লেবীন ২য় খণ্ড, ৭৩ পৃঃ)
মহানবী (স.) এর ঈদের খুত্বাহ দেয়ার সময় ঈদগাহে কোন মিম্বার থাকত না। (বুখঅরী-১৩১ পৃঃ)
তাই তিনি বেলালের কাঁধে হাত রেখে বৃক্ততা করতেন। (মুসলিম ১ম খন্ড-২৮৯পৃঃ) কখনো তীরের উপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে খুত্বাহ দিতেন। (আবূ দাঊদ ১ম খণ্ড-১৬২পৃঃ) আবার কখনো বল্লমের উপর ভর রেখে খুত্বাহ দিতেন। (মুসনাদে শাফিঈ, মিশকাত ১২৬পৃঃ) খুত্বার ভেতরে তিনি বেশী করে তাকবীরও দিতেন। (ইবনে মাজাহ ৯২পৃঃ)
ঈদের দিনে ‘খাস করে’ মুসাফাহ এবং কোলাকুলি ও আলিঙ্গন করার ব্যপারে কুরআন ও হাদীসে কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। তবে কোন কোন হাদীস দারা প্রমাণিত হয় যে, কোন মুসলিম ব্যক্তির সাথে সাক্ষাত হলেই তাকে সালাম করতে হবে। (মুসলিম মিশকাত ১৩৩পৃৃঃ)।
রসূলূল্লাহ (স.) বলেন ঃ যেদিন ঈদুল ফিতরের দিন সেদিন আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদের সামনে গর্ব করতে থাকেন। অতঃপর বলেন, হে আমার ফেরেশতাগণ! মজদুরের পুরস্কার কি, যে তার কাজ পুরোপুরি করেছে? তখন ফেরেশতাগণ বলেন, হে আমাদের প্রতিপালক! তার পুরস্কার তাকে পুরোপুরি এর প্রতিদান দেয়া। এবার আল্লাহ বলেন, হে আমার ফেরেশতাগণ! আমার দাস ও দাসীরা তাদের ওপর চাপানো কর্তব্য পালন করেছে। তারপর তারা উচ্চঃস্বরে (তাকবীর) ধ্বনি দিতে দিতে দো’য়ার জন্য (ঈদগাহে) রওয়ানা হয়েছে। আমার সম্মান ও গাম্ভীর্যের কসম! এবং আমার উদারতা ও উচ্চমর্যাদার কসম! আমি তাদের ডাকে অবশ্য সাড়া দেব। অতঃপর তিনি বলেন, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দিলাম এবং তোমাদের পাপগুলি পূণ্য দ্বারা বদলে দিলাম। নবী (স.) বলেন, তাই তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে ফিরতে থাকে। (বায়হাকীর শুআবুল ঈমান, (মিশকাত ১৮৬-১৮৩ পৃঃ)
আল্লাহ আমাদের সংযম সাধনা কবুল করে ঈদগাহ হতে নিষ্পাপ অবস্থায় ফেরার তাওফীক দান করুন, আমীন।

শুক্রবার, ২৫ মার্চ, ২০১১

ISLAMIC ‘EIDS-1 ( Three EID & Three Opinions)



Muslims must celebrate only three ‘Eids:
(1): ‘Eid-ul-Fitr,
(2): ‘Eid-ul-Adh-haa,
(3): Friday is the day of ‘Eid for Muslims [See ETIQUETTE OF MUSLIMS ON
FRIDAY:BY ‘ABDUL MAJEED ‘ALI HASAN]

These three Eids are exclusively for the Muslims, and that it is not permissible for Muslims to
imitate the kuffaar and mushrikeen in anything that is a distinctive part of their celebrations,
whether it be food, dress, bonfires or acts of worship.
THE DECREES OF AL-‘EID:
There are three opinions among the scholars:
(1): Some say it is waajib (obligatory);
(2): Some say it is Fardul Kifaayah (if some offered the prayer then it is enough and it is not
obligatory upon all); and
(3): Some say it is Sunnatul Muakkadah (recommended)
The evidence of those who say it is waajib:
Some of the scholars say that ‘Eid prayers are waajib (obligatory) – this is the view of the
Hanafee scholars and of Shaykh al-Islaam Ibn Taymeeyah (may Allaah have mercy on him).
They say that the Prophet (!) always prayed the ‘Eid prayer and never omitted to do it, not
even once. They take as evidence the aayah (interpretation of the meaning), “Therefore turn
in prayer to your Lord and sacrifice (to Him only)” [al-Kawthar 108:2], i.e., the ‘Eid prayer
and the sacrifice after it, which is an instruction, and the fact that the Prophet (!) ordered that
the women should be brought out to attend the ‘Eid prayers, and that a woman who did not
have a jilbaab should borrow one from her sister. [See Tamaamul Minnah: by Al-Albaanee:
p.344. Refer to Al-Mughnaee by Imaam ibn Qudaamah: vol. 2, p. 223.]
The evidence of those who say it is Fardul Kifaayah: Some scholars say that Eid prayer is Fardul Kifaayah. This is the view of the Hanbalees. Refer to Al-Mughnaee by Imaam ibn
Qudaamah: vol. 2, p. 223.

The evidence of these who it is sunnatul Muakkadah: A third group say that ‘Eid prayer is sunnah mu’akkadah. This is the view of the Maalikis and Shaafa’is. They take as evidence
the hadeeth of the Bedouin which says that Allaah has not imposed any prayers on His slaves
other than the five daily prayers. Refer to Al-Mughnaee by Imaam ibn Qudaamah: vol. 2, p.
223.

শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১০

ঈদে বাড়ি ফেরা আনন্দময় হোক



ঈদে বাড়ি ফেরা আনন্দময় হোক
 ঈদের সব আনন্দই ভেস্তে যাবে যদি সুস্থ শরীরে গন্তব্যে পেঁৗছানো না যায়। ভ্রমণের সময় ও ঈদের ছুটিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে কী কী করণীয়_জানাচ্ছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম সাইদুর রহমান ও ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রেস্পিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম। ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। এই আনন্দ প্রিয়জনের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারলে আরো বহুগুণে বেড়ে যায়। এ জন্যই এ সময় বাস-ট্রেনের টিকিট পাওয়া এত ব্যাকুলতা। যত কষ্টই হোক পিছু হটি না। কিন্তু ক্লান্তিকর ও দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে বাড়ি পেঁৗছানো এবং পরে আবার কাজে যোগদানের সময় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিশেষ করে শিশুদের পক্ষে লম্বা যাত্রাপথের ধকল সহ্য করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে ছোটখাটো বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা এড়ানো যায় সহজেই।


বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে
অনেকেরই অভ্যাস আছে সত্যিকারের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ব্যাগে না পুরে পথে বেরিয়ে পড়ার। এ কারণে প্রাথমিকভাবে সমস্যায় না পড়লেও পরে আফসোস করতে হয়। এ জন্য এই স্বভাব ত্যাগ করে যাওয়ার দু-এক দিন আগে থেকেই পরিকল্পনা গ্রহণ করুন। কোথায় যাচ্ছেন, সেখানকার আবহাওয়া কেমন, কদিন থাকবেন ইত্যাদি বিষয় চিন্তা করে প্রস্তুতি নিন। এর মাধ্যমে যেমন কম জিনিস বহন করা সম্ভব তেমনি পরে কোনো দরকারি সামগ্রী যেমন ওষুধ, চশমা প্রভৃতি বাড়িতে ফেলে আসার ধকল পোহাতে হবে না।
এ বছর যেহেতু ঈদ গরমের সময় তাই কোথাও যাওয়ার আগে বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখুন। দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে ও রক্তের তারল্য ধরে রাখতে যেখানেই যাবেন বোতলে বিশুদ্ধ পানি সঙ্গে নিন, একটু পর পর নিজে পান করুন এবং আপনার সঙ্গে কোনো ছোট কেউ থাকলে তাকেও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পানে উৎসাহিত করুন। ভ্রমণের সময় পোশাকের ব্যাপারেও সতর্কতা অবলম্বন করুন। খুব বেশি আঁটসাঁট পোশাক পরিধান করে ভ্রমণ করবেন না। বরং হালকা, আরামদায়ক ও সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে_এমন পোশাক ভ্রমণের জন্য নির্বাচন করুন।
কোথাও যাওয়ার সময় কমবেশি মালপত্র সবার সঙ্গেই থাকে। আর যেহেতু নিজেদেরই বইতে হয়, তাই পাদুকাপুরাণ অর্থাৎ আপনি কোন ধরনের জুতা পরে বের হলেন, সেটাও খেয়াল করুন। জুতা জুতসই না হলে চলাফেরায় কষ্ট হবে। ভ্রমণের সময় মেয়েদের যতটা সম্ভব উঁচু হিলের স্যান্ডেল এড়িয়ে ফ্ল্যাট স্যান্ডেল পরা উচিত। কারণ দীর্ঘযাত্রার সময় পরে থাকা উঁচু হিলের জুতা পায়ের রক্ত চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে এবং হাঁটুতে চাপ দেয়; ফলে পায়ের হাড়ে ব্যথা হতে পারে। আবার একেবারে নতুন জুতো পায়ে কোথাও রওনা হবেন না। এতে পায়ে ফোস্কা পড়তে পারে।
রোজা রেখে রওনা হলে অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে কিছু খাবার সঙ্গে রাখুন, যেন ইফতারের সময় হয়ে গেলে বাইরের খাবার না খেতে হয়। অনেকেরই বাসে বা ট্রেনে উঠলে মাথা ঘোরে। একে মোশন সিকনেস বলে। বিভিন্ন কারণেই মোশন সিকনেস হতে পারে। বেশি খারাপ লাগলে কেউ কেউ বমিও করে থাকেন। তাঁরা রওনা হওয়ার আগেই অ্যাভোমিন জাতীয় ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন এবং বিব্রতকর পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষা পেতে সঙ্গে প্লাস্টিকের প্যাকেট রাখুন।
বাসে বা ট্রেনে ওঠার আগে বেশ খানিকটা পথ রোদে হাঁটার প্রয়োজন হয় বা অনেকটা সময় বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, তাহলে সানবার্ন থেকে বাঁচতে ছাতা কিংবা রোদচশমা ব্যবহার করুন।
শিশুরা সব সময় ছাতার নিচে থাকতে রাজি না হলে বিকল্প হিসেবে তাদের হ্যাট পরাতে পারেন। ছাতা সঙ্গে রাখার আরেকটা উপকারী দিক হলো রওনা হওয়ার পর হুট করে বৃষ্টি-বাদল শুরু হলে সেটা আপনাকে ভিজে যাওয়া থেকে বাঁচাবে। নতুবা বাড়ি গিয়ে আনন্দ করার বদলে সর্দি-হাঁচি-কাশি-জ্বর এসবেই কাহিল হয়ে পড়বেন।
ঈদের সময় যেহেতু অনেক মানুষ একই বাড়িতে একত্র হন, ফলে যেখানে যাচ্ছেন সেখানে সব কিছু সব সময় হাতের নাগালে নাও পেতে পারেন। তাই যাওয়ার আগে গুরুত্বপূর্ণ কিটসমৃৃদ্ধ ফার্স্ট এইড বক্স নিতে কিছুতেই ভুলবেন না। মনে রাখবেন, ঈদের সকালে অসতর্কতাবশত হাত কেটে গেলে কিংবা আপনার সন্তান খেলতে গিয়ে হাঁটু ছিলে ফেললে এই ফার্স্ট এইড বক্সই হয়তো বড় বিপদ থেকে রেহাই দেবে।
এ ছাড়া একটি নোটবুকে আপনার পরিচিত চিকিৎসক ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ফোন নম্বর ও ঠিকানা লিখে রাখুন। এতে দুর্ঘটনা মোকাবিলা করা তুলনামূলকভাবে সহজ হবে।
ভ্রমণের সময়কোথাও রওনা হলে বারবার অল্প পরিমাণে পানি সঙ্গে রাখা যেমন অত্যাবশ্যক তেমনি প্রস্রাব খুব বেশিক্ষণ আটকে না রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই শুচিবায়ুর জন্য যেখানে-সেখানে বাথরুমে যাওয়ার ভয়ে পানি কম খান, যা একেবারেই ঠিক নয়।
ভ্রমণকালে বাস বা ট্রেনের জানালা দিয়ে কখনো থুতু বা কফ বাইরে ফেলবেন না। এর মাধ্যমে বিভিন্ন রোগজীবাণু সংক্রমিত হতে পারে। হাঁচি এলে মুখে রুমাল ব্যবহার করুন। দীর্ঘ সময়ের ভ্রমণে আরেকটি সমস্যা দেখা দেয়, সেটা হলো পা ফুলে যাওয়া বা পায়ে পানি চলে আসা। বাসে বা ট্রেনে অনেকক্ষণ বসে থাকলে এমন হয়। এ জন্য টানা বসে না থেকে একটু হাঁটাচলা করতে পারেন। অবশ্য ট্রেনে বা লঞ্চে হাঁটাচলার সুযোগ পাওয়া গেলেও বাসে বা প্রাইভেটকারে তা পাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে পায়ের কিছু ব্যায়াম আয়ত্ত করে নিতে পারেন, যেগুলো এক জায়গায় বসে থেকেই করতে পারবেন। এ ছাড়া আজকাল দূরপাল্লার প্রায় সব বাসই যাত্রাপথে কোথাও না কোথাও কিছু সময়ের জন্য বিরতি নেয়, সে সময় বাসে বসে না থেকে বা অলস সময় না কাটিয়ে হাঁটাচলার মাধ্যমে পায়ের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করে নিতে পারেন। প্রাইভেটকারে রওনা হলে পথে দু-এক জায়গায় থেমে একটু হাঁটাচলা করুন।
যাত্রাপথে অনেকেই বই পড়ে সময় কাটান। ভালো অভ্যাস কিন্তু আপনার যদি মোশন সিকনেস থাকে, তাহলে দয়া করে এ কাজটি করতে যাবেন না। ট্রেনে দুলনির সঙ্গে সঙ্গে বই পড়ার ফলে মাথা ঘোরা শুরু হতে পারে, যা থেকে পরে বমিও হতে পারে। মোশন সিকনেস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাস বা ট্রেন চলাকালে বাইরের দিকে তাকিয়ে না থেকে ও বই না পড়ে বরং চোখ বন্ধ রাখুন। সম্ভব হলে ঘুমিয়েও নিতে পারেন।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়, ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার সময় অপরিচিত কেউ কিছু দিলে খাবেন না। একই কথা প্রযোজ্য, ঈদ কাটিয়ে ফিরে আসার সময়ও।

শিশু ও বয়স্কদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিন
ভ্রমণের সময় শিশুরা অধিক উত্তেজনাবশত প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। কখনো সে ব্যথা পায়, কখনো হারিয়েও যায়। এ জন্য আপনার সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কী করছে, কার সঙ্গে খেলছে_সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখুন। একেবারে ছোট দুগ্ধপোষ্য শিশু নিয়ে ভ্রমণ না করাই উচিত। একান্ত প্রয়োজনে বের হতে হলে তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করে তবেই বাসা থেকে বের হোন। ভ্রমণের সময় শিশুদের ধুলাবালি থেকে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে, এদিকে সতর্ক থাকুন। শিশুদের বাইরের খোলা খাবার খাওয়ানো থেকে বিরত রাখার জন্য বাসায় তৈরি কিছু মুখরোচক খাবার সঙ্গে নিয়ে নিন। তারা যথেষ্ট পরিমাণে পানি ও তরল-জাতীয় খাবার খাচ্ছে কি না, সেদিকে সব সময় লক্ষ রাখুন।
বয়স্ক মানুষের জন্য বাসে বা ট্রেনে ওঠা কষ্টসাধ্য হয়ে থাকে। সে সময় তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। বাসের মধ্যেও যেন তারা একই ভঙ্গিতে বেশিক্ষণ বসে না থাকে, সে ব্যাপারে সজাগ থাকুন।

গর্ভাবস্থায় ভ্রমণে করণীয়
বিশেষ কিছু ক্ষেত্র ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা বেশ নিরাপদেই ভ্রমণ করতে পারেন। তবে দেহে ঝাঁকির উদ্রেক হয়_এমন পথ যথাসম্ভব পরিহার করুন। প্রথম তিন মাস ও সাত মাস বা ২৮ সপ্তাহ পেরোনোর পর ভ্রমণ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। গর্ভাবস্থায় একা ভ্রমণের চিন্তা করা ঠিক নয়। নিরাপদ মাতৃত্বের স্বার্থে কোনো ধরনের বিপদের ঝুঁকি নেবেন না; এ জন্য যাঁরা ৩৫ বছর পেরোনোর পর প্রথমবারের মতো মা হচ্ছেন, যাঁদের উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা আছে, যাঁরা মেরুদণ্ডের সমস্যায় আক্রান্ত এবং ইতিপূর্বে যাঁরা মাতৃত্বজনিত জটিলতার মুখোমুখি হয়েছেন, তাঁরা এবারে ঈদের আনন্দ বাড়িতে বসেই উপভোগ করুন। অন্য যেকোনো ধরনের সমস্যা সমাধানে সর্বদা চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।  
ভ্রমণের সময় ব্যায়াম

বাসে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার সময় অনেকক্ষণ বসে থাকার জন্য অনেকেরই পা ফুলে যায়। গন্তব্য স্থলে যাওয়ার জন্য ছয়-সাত ঘণ্টার বেশি একনাগাড়ে বসে থাকার প্রয়োজন হলে এমন ঘটনা বেশি ঘটে। এ সময়ে শরীরে একধরনের জড়তাও ভর করে। এ ধরনের বিভিন্ন অসুবিধা দূর করতে কয়েকটা ব্যায়াম জেনে নিন, যেগুলো বাসে বা গাড়িতে বসেই করা সম্ভব। এতে ভ্রমণ আনন্দদায়ক হওয়ার পাশাপাশি দেহও সতেজ থাকবে ।
* কিছুক্ষণ পর পর স্ট্রেচিং বা আড়মোড়া ভাঙার চেষ্টা করুন।
* বসে থেকেই হাত কয়েকবার ওপর-নিচ করতে পারেন। এতে দেহের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।
* দীর্ঘ সময় বসে থাকার ফলে অনেকেরই পা ফুলে যায়। এ সমস্যা এড়াতে বসে থেকেই একটু পর পর দুই পা গোড়ালির ওপর ভর করে কয়েকবার ঘুরিয়ে নিন।
* শূন্যে ঘুষি মারাও কিন্তু হাতের একধরনের ব্যায়াম। এর মাধ্যমে দুই বাহুতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখা সম্ভব।
* বাস থামলে বা গাড়ি থামিয়ে সুযোগ পেলেই হাঁটাহাঁটি বা নড়াচড়া করে শরীরের অবসাদ দূর করুন। গ্রন্থনা : হুমায়রা ফেরদৌস

ঈদের খাবার হিসাব করে খান



ঈদের খাবার হিসাব করে খান 
ঈদের আনন্দ ছোটদের সবচেয়ে বেশি। ছোট বলে তারা একটানা রোজা রাখে না, শখ করে দু-একটা রাখে, তাই রোজা শেষে ঈদের দিন মজার মজার খাবার তারা খেতে পারে। সাধারণত এতে ওদের সমস্যা কম হয়। তবে অতিভোজনে যে কারো মতো ছোটদেরও সমস্যা হতে পারে।
১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা সাধারণত রোজা রাখেন। তার পরও রোজার পর ঈদের খাওয়া-দাওয়া তাঁদের ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না, কোনো শারীরিক সমস্যা না থাকা ও হজমে সহায়ক সব ধরনের এনজাইমের সঠিক নিঃসরণের কারণে। শরীরে তাঁদের অন্যান্য অসুখ না থাকলে গুরুপাক খাদ্যগুলো সহজে হজম হয়ে যায়।
তবে মলত্যাগের সময় পায়ুপথে ব্যথা, জ্বালাপোড়া ও কখনো কখনো রক্তক্ষরণ হতে পারে। এক মাস রোজায় দীর্ঘসময় পানি ও অন্যান্য তরল খাবার খাওয়া হয় না। ইফতারের পরও পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পান করা হয় না। ফলে শরীরের পানির ঘাটতি পুরোপুরি পূরণ হয় না। ইফতার ও সেহ্রিতে আমরা যে ধরনের খাবার যেমন ছোলা, পেঁয়াজু ইত্যাদি খেয়ে অভ্যস্ত, তাতে আমাদের শাকসবজির অভাবও থেকে যায়; তাই স্বাভাবিকভাবেই শতকরা ৪০ ভাগ মানুষের কোষ্ঠ কাঠিন্য অথবা অনিয়মিত পায়খানা হওয়ার অভ্যাস হয়।
অন্যদিকে ঈদের দিন প্রচুর তৈলাক্ত খাবার, পোলাও, বিরিয়ানি ও আমিষ জাতীয় খাবার, যেমন মুরগি, খাসি বা গরুর মাংস, কাবাব, রেজালা ইত্যাদি খাই। এসব খাবার অন্ত্র থেকে অতিরিক্ত পানি শোষণ করে। ফলে কোষ্ঠ কাঠিন্যের সমস্যা আরো বেড়ে যায় ও অ্যানাল ফিশার ও পায়ুপথে জ্বালাপোড়া, ব্যথা ইত্যাদি হতে পারে। যাদের আগে থেকেই হিমোরয়েড বা পাইলসের সমস্যা আছে তাদের পায়ুপথে রক্তক্ষরণ পর্যন্ত হতে পারে।যা করতে হবেঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে অল্প করে সেমাই বা পায়েস খান। সেমাই ও পায়েসের সঙ্গে কিশমিশ, বাদাম ইত্যাদি খান, খাবার আগে ফলের জুস, যেমন পেঁপে, আম ইত্যাদি খেতে পারেন, তবে আনারসের জুস না খাওয়াই ভালো। খাবার আধঘণ্টা পর দেড় থেকে দুই গ্লাস পানি খেয়ে নামাজ পড়তে যান।
* দিনে বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে প্রচুর পানি ও অন্যান্য তরল খাবার খান।
* একেবারে বেশি করে না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খান।
* যারা ঈদের দিন চটপটি জাতীয় খাবার পছন্দ করেন তারা তেঁতুলের টক সঙ্গে নিন।
* পোলাও বা বিরিয়ানির সঙ্গে অবশ্যই সালাদ (টমেটো, শসা ইত্যাদি) খান।
* খাবারের পর ডেজার্ট হিসেবে দই খান।

মধ্যবয়সী (৩০ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের জন্য) মানুষের খাবার সম্পর্কে সচেতন থাকা প্রয়োজন। এমনকি হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, হাইপারকোলেস্টেরমিয়া ইত্যাদি না থাকা সত্ত্বেও এই বয়সের মানুষের ঈদের খাবারের ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক থাকা দরকার। মধ্যবয়সীদের যে সমস্যাগুলো দেখা যায় তা হলো_
* পেট ভরা ভাব বা অস্বস্তিকর অনুভূতি বা ব্লটিং। রোজার পর হঠাৎ করে তৈলাক্ত, চর্বিযুক্ত খাবার অতিরিক্ত খাওয়া হয়। এসব খাবার পরিপূর্ণভাবে পরিপাক করতে অন্তত ১১ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লাগে। একবারে বেশি খাবার খাওয়ার জন্য পেটে অস্বস্তিকর অনুভূতি, ভরা ভরা ভাব, বারবার ঢেকুর ওঠা এমনকি বুকে ব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।
* যাদের পেপটিক আলসার ডিজিজ আছে তাদের রোজার সময় দীর্ঘক্ষণ পেট খালি থাকার জন্য নিঃসরিত হাইড্রোক্লোরিক এসিড পাকস্থলী ও ডিওডেনামে ক্ষয় করে। ঈদের দিন তৈলাক্ত ও ঝাল মশলাযুক্ত খাবার খাওয়ায় পাকস্থলী ও ডিওডেনামের ক্ষতে পুনরায় প্রদাহের সৃষ্টি হয় ও বুক জ্বলা, পেট জ্বলা ইত্যাদি অনেক বেড়ে যায়।
* মহিলাদের সাধারণত আইবিএস বা ইরিটেবল বাওল সিনড্রোম দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে দুগ্ধজাত খাবারগুলো যেমন পায়েস, সেমাই, হালুয়া ইত্যাদি খাবারে অস্বস্তি, ঘন ঘন মলত্যাগ ও অসম্পূর্ণ মলত্যাগের অনুভূতি হয়।
* কোষ্ঠ কাঠিন্য বা পায়ুপথে ব্যথা ও রক্তক্ষরণের সমস্যায় আক্রান্ত হন অনেকে।
যা করতে হবে
* অতিরিক্ত পোলাও, বিরিয়ানি জাতীয় খাবার খাবেন না।
* যাদের পেটে অস্বস্তি বা গ্যাস হয়েছে বলে মনে হচ্ছে তাঁরা মটিলিটি বাড়ানোর জন্য ডমপেরিডন জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন।
* যাদের পেপটিক আলসার ডিজিজ আছে তারা সকালে উঠেই অ্যান্টিআলসারেন্ট-রেনিটিডিন, ওমিপ্রাজল বা প্যান্টোপ্রাজল গ্রুপের ওষুধ খান। ওষুধ খাওয়ার এক-দুই ঘণ্টা পরে খাবার খান। এন্টাসিড জাতীয় ওষুধও খেতে পারেন।
* যাদের আইবিএস আছে তারা দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন।
* রাতে কোনো দাওয়াতে গেলে অল্প খাওয়ার চেষ্টা করুন। খেয়েই ঘুমিয়ে পড়বেন না। খাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা পর বিছানায় যাবেন।
* ঈদের সময় সাধারণত সবাই একত্রে বসে খাওয়া হয় ও খাবার সময় গল্পগুজব করা হয়। এতে অতিরিক্ত বাতাস পাকস্থলীতে ঢুকে বার বার ঢেকুর তোলার সমস্যা হতে পারে। তাই খাবারের সময় যতটা সম্ভব কম গল্পগুজব করুন ও খাবার ভালো করে চিবিয়ে খান।
* খাবারের ফাঁকে ফাঁকে পানি খাবেন না, এতে হজম রসগুলো পাতলা হয়ে যায়। ফলে হজমে অসুবিধা হয়। তাই খাওয়ার অন্তত এক-ই ঘণ্টা পর পানি পান করুন।
* খাবারের মাঝে বোরহানি খেতে পারেন, তবে কোল্ড ড্রিংকস পরিহার করুন।
* খাবারের পর টকদই খান।

তবে ঈদের সময় বয়স্ক মানুষের জন্য ভারী খাবারগুলো অনেক ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে। যেমন_
* বমি ভাব হওয়া ও বমি হওয়া
* ডায়রিয়া
* পেট ব্যথা
* বুক ব্যথা
* কোষ্ঠকাঠিন্য
* ইনটেস্টিনাল অবস্ট্রাকশনওহতে পারে

যা করতে হবেভারী খাবার না খাওয়াই ভালো। যদি একান্তই খেতে হয়, তবে পরিমাণে খুব কম খেতে হবে। যে খাবারে সমস্যা বেশি হয়, তা এড়িয়ে চলুন। পেটে গ্যাস হলে ডমপেরিডন জাতীয় ওষুধ, এসিডিটির সমস্যা হলে এন্টাসিড, রেনিটিডিন, ওমিপ্রাজল, প্যান্টোপ্রাজল ওষুধ খান। খাওয়ার পর দই বা টক দই খান। তবে সবচেয়ে ভালো ভারী খাবার এড়িয়ে ভাত, মুরগির মাংস বা মাছ খাওয়া। তাতে সমস্যা কম হবে।

ঈদে আশেপাশে এক চক্কর

ঈদে আশেপাশে এক চক্কর


ছোট্ট ছুটিতে আমরা কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ পাই না প্রায়ই। সিদ্ধান্ত নিতেই ছুটি শেষ! মনকে তখন বোঝাতে হয়, আগামী ছুটিতে...। স্বল্প সময়ের ছুটি কিংবা অবসরকে অর্থপূর্ণ না করার কারণ বেড়ানোর স্থানের খোঁজখবর না জানা। এ ব্যর্থতা আমাদের, ভোগায়ও আমাদের। ঈদের ছুটিকে আনন্দময় করে তুলতে আমাদের এবারের আয়োজন। ঈদের ছুটিতে আমরা কোথায় কোথায় বেড়াতে যাব, তা ঠিক করে নেই। ঢাকা কিংবা ঢাকার পাশে ও বাইরে রূপসী বাংলার দর্শনীয় স্থান এবং যেখানে যাওয়া হয়নি সেসব সম্পর্কে তুলে ধরা হলো। বেড়ানো, হোক না তা স্বল্প সময়ের জন্য। তা আর দেরি কেন! কোথায় যাবেন ঈদের ছুটিতে তা এখনই ঠিক করে নিন। লিখেছেন রাজীব পাল রনী

নন্দন : যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তি ও ডিজাইন এবং ভারতের নিকো পার্কের সহযোগিতায় তৈরি নন্দনপার্ক। নবীনগরের কাছে বাড়ইপাড়ায় ১২০ বিঘা জায়গাজুড়ে বিশাল এ পার্কে ভেসে আসে সাগরের ধ্বনি। পার্কে রয়েছে ক্যাবল কার, প্যাডেল বোট, আইস ল্যান্ড, ক্রেজি সাইকেল, ক্যাটার পিলার এবং নেট-এটলসহ অসংখ্য রোমাঞ্চকর রাইড। এছাড়া বনভোজনের জন্য আদর্শ স্থান। রয়েছে বিভিন্ন দোকান। দোকানে সমুচা, সিঙ্গারা থেকে শুরু করে ফ্লাইড চিকেন—সবই পাবেন। ৫৫০টি গাড়ি পাকিং এবং কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা। ছুটির দিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা এবং অন্যান্য দিন বেলা ১১ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য পার্ক খোলা থাকে। পিকনিক বা বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন। ফোন : ৯৮৯০২৮৩, ৯৮৯০৯২১, ৯৮৯৮৯৪৯, ০১৮১৯-২২৩৫২৯।
ফ্যান্টাসি কিংডম : ঢাকার আশুলিয়ার বড় বিনোদন কেন্দ্র ফ্যান্টসি কিংডম। মজার ল্যান্ডস্কেপিং এবং রোমাঞ্চকর সব রাইড রয়েছে এ পার্কে। যেমন—রোলার কোস্টার, জায়ান্ট ফ্লম, সান্ডামারিয়া, ম্যাজিক কার্পেট, ওয়ালি বার্ড, জুজুট্রেন, বাম্পার বার, বোটসহ আকর্ষণীয় আরও অনেক রাইড। তাছাড়া সঙ্গেই ওয়াটার কিংডমের পানির মধ্যে বিনোদনের অপূর্ব আয়োজন। মাটির নিচ দিয়ে ট্যানেল পার হয় বা সাগরের উত্তাল ঢেউ তৈরি করা ওয়েভপুল আপনাকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত। ইতিহাস সমৃদ্ধ স্থাপনা জাতীয় স্মৃতিসৌধ, চুনাখোলা মসজিদ, ষাটগম্বুজ মসজিদ, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার এবং কান্তজিউর মন্দিরের প্রতিকৃতি উপভোগ করতে পারেন হেরিটেজে। খাবারের জন্য আন্তর্জাতিক মানের রেস্টুরেন্ট ও ওয়াটার ক্যাফে রয়েছে। তাছাড়া রয়েছে কেনাকাটা এবং গিফটশপ। বিশেষ দিন ও শুক্রবার আয়োজন করা হয় কনসার্টের। ফ্যান্টাসি কিংডম ৪০০ গাড়ি পাকিং এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা। ছুটির দিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে। যোগাযোগ : ৮৮২৯৮৭১, ৮৮১৪০২৮।
পদ্মা রিসোর্ট : বাংলাদেশের নদীনির্ভর জীবনযাত্রার হাজার বছর ধরে যে অপরূপ সৌন্দর্য দেশ ও বিদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি ট্যুর অপারেটর। পদ্মার চরের মধ্যে তারা গড়ে তুলেছে পদ্মা রিসোর্ট। ভ্রমণপ্রিয়দের আনন্দ দিতে কি নেই এখানে! মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার ঘোরাদৌর বাজারের অপরপাশে নদীর মাঝেই বিশাল বিস্তৃত চড়ের মধ্যে পদ্মা রিসোর্ট। পদ্মার চরে গড়ে ওঠা রিসোর্টে থাকার জন্য আছে ১৮টি ডুপ্লেক্স। ঘরের চাল সুন্দরী পাতা দিয়ে তৈরি। দেয়াল ও অন্যান্য জায়গায় বাঁশ এবং তালগাছের পাতা ব্যবহার করা হয়েছে। রিসোর্টটির চারদিকে পদ্মা নদী প্রবাহিত হওয়ায় সার্বক্ষণিক মৃদু ঠাণ্ডা বাতাস বিরাজ করে।
বালুচরে পদ্মা রিসোর্টে বসে দেখতে পারেন সূর্যাস্ত বা সূর্যোদয়। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রিসোর্টের ভাড়া পড়বে ২৩০০ টাকা আর ২৪ ঘণ্টা থাকা-খাওয়ার জন্য ভাড়া পড়বে ৩৫০০ টাকা। পদ্মা রিসোর্টে ঘুরতে যেতে চাইলে যোগাযোগ করুন মিলেনিয়াম ট্যুর অপারেটর, ৮৪ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০। ফোন : ০১৯১৩-৫৩১৮২০ অথবা ০১৭১৩-০৩৩০৪৯।
রাসেল পার্ক : ঢাকা-নরসিংদী সড়কে মুড়াপাড়ায় রাসেল পার্কের অবস্থান। ঢাকা থেকে ২৩ কিলোমিটার দূরত্ব। ২০ টাকার টিকিটের বিনিময়ে সবুজ গাছের সারি, মিনি চিড়িয়াখানা, পুকুর এবং খেলার মাঠসহ ছোট-বড় কটেজ ঘুরে দেখা যায়।
ইনানী ও হিমছড়ি সমুদ্র সৈকত : ইনানী সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার সময়টা জোয়ার-ভাটা হিসাব করে নির্ধারণ করাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কক্সবাজার থেকে ইনানী সমুদ্র সৈকতের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। এখানে রয়েছে সারিসারি ঝাউ বাগান ও সৈকতের অপর ছড়ানো-ছিটানো ছোট-বড় পাথর। ইনানী বিচে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখার মজাই আলাদা। কক্সবাজার থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটারের পথ হিমছড়ি। এখানে সৈকতের শেষ সীমানায় লোকালয় ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে আছে উঁচু পাহাড়। পাহাড়ের গা-বেয়ে নেমে আসা ঝরনার অপরূপ দৃশ্য চোখে পড়বে। এখানকার পরিবেশ শান্ত। কক্সবাজার থেকে লোকাল জিপে জনপ্রতি ভাড়া ৫০-৭০ টাকায় পাহাড়ঘেঁষা রাস্তা দিয়ে পৌঁছে যেতে পারেন হিমছড়িতে। হিমছড়ি যেতে সময় লাগবে ৪০-৫০ মিনিট।
পানামনগরী : সোনারগাঁয়ে অবস্থিত পানামনগরী। সোনারগাঁয় এক সময় বাংলার স্বাধীন সুলতানদের রাজধানী ছিল। আপনি পানামনগর দেখার পাশাপাশি ঘুরে আসতে পারেন সোনারগাঁয়ের লোকশিল্প জাদুঘরে। ১১টি গ্যালারি রয়েছে। প্রতিটি গ্যালারিতে দুর্লোভ ঐতিহ্যের সংরক্ষিত আছে। গ্যালারিগুলো হলো নিপুণ কাঠ খোদাই গ্যালারি, গ্রামীণ জীবন, পটচিত্র, মুখোশ, নৌকার মডেল, আদিবাসী, লোকজ বাদ্যযন্ত্র ও পোড়ামাটির তৈজসপত্র, বাঁশবেত, শীতল পাটির গ্যালারি। তাছাড়া ফাউন্ডেশন চত্বরে দু’জন অশ্বরোহী ভাস্কর্য, দৃষ্টিনন্দন লেক, গরুর গাড়ির সংগ্রাম ভাস্কর্য। মতিঝিল থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পানামনগরীতে যেতে পারেন যে কোনো মোগড়াপাড়াগামী বাসে। বাসে ভাড়া লাগবে ২০-২৫ টাকা। মোগড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডে নেমে রিকশায় বা অটোতে যেতে পারেন পানামনগরীতে।
বিভিন্ন বিনোদনের স্পট : ঢাকা চিড়িয়াখানা—মিরপুর, ফোন : ৯০০২৯৫৪, ৯০০২০২০। বোটানিক্যাল গার্ডেন—মিরপুর, ফোন : ৮০১৮০৯২, ৮০১৯১৩৬, শিশুপার্ক : শাহবাগ, ফোন : ৮৬২৩৩০৪, জাতীয় জাদুঘর—শাহবাগ; আহসান মঞ্জিল— লালবাগ; হেরিটেজপার্ক : সাভার; জাহানারা ইমাম জাদুঘর : ৫৫, এলিফ্যান্ট রোড, লালবাগ কেল্লা : লালবাগ; জাতীয় বিজ্ঞান প্রযুক্তি জাদুঘর—আগারগাঁও, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর—ধানমন্ডি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার—বিজয়সরণি, সামরিক জাদুঘর—বিজয়সরণি। এছাড়াও ঢাকার বাইরে কুমিল্লার ময়নামতি; কুয়াকাটা, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার, সুন্দরবন, মনোরম স্থানে যেতে পারেন।

ঈদের উপহার

ঈদের উপহার

-আয়ান রায়হান

আর দুদিন গড়ালেই দেখা যাবে ঈদের চাঁদ। সবাই কেনাকাটার তালিকাটি মাথায় রেখে ছুটছেন এ-দোকান থেকে ও-দোকানে। কেনাকাটার রয়েছে রকমফের। কেউ নিজের জন্য, কেউ বা কিনছেন আত্মীয় বা বন্ধুদের জন্য। ঈদ মানে যেহেতু আনন্দ, তাই ঈদের আনন্দটুকু সবার মাঝে বিলিয়ে দিতে রাজধানীর গিফট শপগুলোতে জনসমাগম চোখে পড়ার মতো।
উপহার কিনুন বয়স বুঝে : আপনার গিফটটি হওয়া চাই বয়সের সঙ্গে মানানসই। কারণ উপহার দেয়ার সঙ্গে জড়িয়ে আছে একজনের রুচির পরিচয়। যার জন্য কিনছেন, তার পছন্দ জানা থাকলে চটজলদি কিনে ফেলতে পারবেন। তবে যদি পছন্দ জানা না থাকে, তাহলে বয়স আর আপনার সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারটি মাথায় রেখে গিফটটি কিনুন।
আপনার বাবা। ছায়াঘেরা বারান্দার দোলখাওয়া চেয়ারটিতে বসে হারিয়ে যেতে পছন্দ করেন স্মৃতিবিজড়িত অতীতে। রবীন্দ্র অথবা নজরুলসঙ্গীতের সিডি উপহার হিসেবে দিতে পারেন তার অতীতকে আরও ছন্দময় করে তোলার জন্য।
চমত্কার রাঁধুনী আপনার মা। টিভিতে কোনো রেসিপি দেখলে আটকে যান সেটির কাজে। রান্নাপ্রিয় মাকে একটি রেসিপির বই উপহার দিন, যেখানে তিনি খুঁজে পাবেন একসঙ্গে হাজার রসনাবিলাস। অথবা মাকে উপহার হিসেবে দিন ফ্রেমেবাঁধা স্মৃতিময় কোনো ছবি, যা দেখে অগোচরেই তার চোখ থেকে বেরিয়ে আসবে দু’ফোঁটা অশ্রু আর ঠোঁটে ফুটে উঠবে এক চিলতে হাসি। কলেজপড়ুয়া ভাইটি অনেক স্টাইলসচেতন। তার জন্য কিনতে পারেন সান গ্লাস, ঘড়ি, পারফিউম বা হাতের চমত্কার ব্রেসলেট। বইয়ের ভেতর সারাদিন খুঁজে পাওয়া যায় যে বোনটিকে— সায়েন্সফিকশন, বিখ্যাত লেখকের জীবনী, রম্যরচনা অথবা তার প্রিয় কোনো লেখকের বই হবে তার জন্য উত্কৃষ্ট উপহার। কিংবা সুন্দর একজোড়া কানের দুল, জুয়েলারি বক্স নিশ্চয়ই সে পছন্দ করবে।
ঈদের গিফট যা-ই হোক না কেন, ঈদকার্ডের জুড়ি নেই। সব বয়সের মানুষের জন্য রয়েছে দারুণসব ঈদকার্ড, সঙ্গে নানা ধরনের শো-পিস।
আর হ্যাঁ, আপনার সোনামণিটির কথা ভুলবেন না যেন! চকলেট বক্স, কার্টুন বা ছড়ার ডিভিডি, একটি টয় সেট—তার ঈদ হয়ে উঠবে আরও পরিপূর্ণ।

ঈদ আনন্দ যাদের জন্য

ঈদ আনন্দ যাদের জন্য

-মুহাম্মদ তৈয়্যেব হোসাইন

ঈদের ফজিলত এবং করণীয় বর্ণনা করতে গিয়ে হজরত শায়খ আবদুল কাদির জিলানী (রহ.) বলেন—
‘ঈদ তাদের জন্য নয়, যারা পানাহারে নিমজ্জিত। ঈদ তাদের জন্য যারা ইখলাছ ও নিষ্ঠার সঙ্গে ইবাদতে লিপ্ত।’
‘ঈদ তাদের জন্য নয়, যারা ভালো ও উত্তম কাপড় পরিধান করে সুসজ্জিত। ঈদ তাদেরই জন্য যারা খোদায়ি সতর্কবাণীতে ভীতসন্ত্রস্ত।’
‘ঈদ তাদের জন্য নয়, যারা সুগন্ধি ব্যবহার করে সুরভিত। ঈদ তাদেরই জন্য যারা নিজের গোনাহ থেকে তওবার মাধ্যমে আল্লাহ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্ত।’
‘ঈদ তাদের জন্য নয়, যারা দুনিয়ার চাকচিক্যের পূজারত। ঈদ তাদেরই জন্য যারা তাকওয়া পরহেজগারিকে করে নিচ্ছে অনবরত।’
‘ঈদ তাদের জন্য নয়, যারা উন্নত আরোহণে আরোহিত, ঈদ তাদেরই জন্য যারা যাবতীয় গোনাহখাতা থেকে বিদুরিত।’
‘ঈদ তাদের জন্য নয় যারা ফরস ফুরুসে লাল গালিচার মতো। ঈদ তাদেরই জন্য যারা পুলসিরাত করতে পেরেছে অতিবাহিত।’
সুতরাং মুসলমানদের ঈদ, তাদের আনন্দ-উত্সবের মূল বক্তব্যই হলো আল্লাহর স্মরণ, আল্লাহর জিকির, আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব, আল্লাহর বড়ত্বকে দৃষ্টির সামনে রেখে সম্মিলিত আনন্দের পরিবেশ গড়ে তোলা। যাতে থাকবে নিজের পরিবারের, সমাজের, দেশের, সমগ্র দুনিয়ার অন্তর্ভুক্তি। থাকবে অন্তর্ভুক্তি ঈমানদার জীবিত সব মানুষ। মৃত জগতে যারা চলে গেছেন তারাও থাকবেন শামেলে হাল। এই আনন্দে অংশগ্রহণে ধনী-দরিদ্রে থাকবে না কোনো ভেদাভেদ। বরং দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে এই আনন্দে একাকার করতে ইসলাম ধনীদের ওপর ওয়াজিব করেছে সদকায়ে ফিতর। সদকায়ে ফিতরে অন্তর্নিহিত অন্যতম তাত্পর্য হচ্ছে ঈদের আনন্দে ঈদের খুশিতে দরিদ্র শ্রেণীর লোকদেরও শামিল করে নেয়া। কেননা, ঈদের নামাজের আগেই যখন একজন অভাবী অনাহারি মানুষ কিছু পায়, তখন তা তার আনন্দের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সদকায়ে ফিতরের আরও একটি তাত্পর্য হলো, এটি রোজার জাকাত। জাকাত যেমন সম্পদকে পবিত্র করে সদকায়ে ফিতর তেমনি রোজাকে পবিত্র করে। মানুষ ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতির ক্ষতি পূরণ করে সদকাতুল ফিতর।

ঈদে পরিপাটি ঘর দুয়ার

ঈদে পরিপাটি ঘর দুয়ার

-সোহরাব আলম

ঈদের আগমন আর মাত্র দিন কয়েক বাকি। ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতিও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে অনেকের। এবার শুধু ঈদ উদযাপনের পালা। কবি নজরুলের গানের মতো করেই সবার মধ্যে সুর ধ্বনিত হচ্ছে— ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।’
ঈদ উপলক্ষে নিজেকে গুছানোর পর্ব ইতোমধ্যে শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন কেউ কেউ। অর্থাত্ পোশাক-আশাক, গয়না-গাটি থেকে শুরু করে জুতা-মোজাসহ অন্যান্য সাজসজ্জার সরঞ্জাম কেনা—সে তো আগেই শেষ। চাঁদ রাত পর্যন্তও হয়তো কেউ কেউ কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকবেন। কিন্তু সাজসজ্জার অন্য দিকটা কি বাদ পড়ে গেল? ভেবে দেখুন তো ঈদ উদ্যাপনে এত যে আয়োজন এতে আপনার ঘরবাড়ির সাজের ব্যাপারটি আছে কিনা! অবশ্যই থাকতে হবে। কারণ, ফুরফুরে মেজাজে ঈদ করতে চাইলে তো ঘর-বাড়ি পরিপাটি থাকতেই হবে। ঈদের দিন এবং এর আগে ও পরে অতিথির আগমনও তো ঈদ উদ্যাপনেরই একটা অংশ। তাহলে কী করা উচিত ঘর-বাড়ি পরিপাটি করে সাজাতে। সাজটাইবা কেমন হবে?
বসার ঘর : বসার ঘর বা ড্রয়িং রুমটা সাজাতে হবে পুরোপুরি অতিথিদের কথা মাথায় রেখে। যাতে যে কোনো অতিথি ঘরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে মুগ্ধ হয়ে যায়। যেহেতু ঈদ, মোটিফটাতে যেন পবিত্র ও স্নিগ্ধ ভাব থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সোফা নতুন বা পুরনো যাই হোক না কেন তা যেন থাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। সোফার কভার যে কোনো লাইট কালারের হলেই উত্সবের ভাবটা বেশি ফুটে উঠবে বলে জানালেন একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কুশন কভার যে কোনো অতিথির মুগ্ধতা বাড়িয়ে দিতে পারে। সম্ভব হলে ঈদের জন্য নতুন স্পেশাল কোনো কুশন কভার ব্যবহার করতে পারেন। কুশন কভারের নকশা যদি হয় চাঁদ-তারা বা লতাপাতায় সজ্জিত তাহলে খুবই ভালো লাগবে। দেয়ালের রং যদি ফ্যাকাশে হয়ে থাকে তাহলে এ উপলক্ষে নতুন করে রং করিয়ে নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে লাইট কালারকেই গুরুত্ব দিন। চাইলে দেয়ালে নকশাও করিয়ে নিতে পারেন। অলঙ্কৃত টবে সবুজ গাছ যদি ঘরের চারকোনায় রাখেন তাহলে তা অন্য রকম আবেদন সৃষ্টি করবে। ঘরের টিভি সেট বা বুকশেলফটি বসার ঘরের কোনো একদিকে স্থান দিলে নিশ্চয়ই আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলবে। অবশ্য বসার ঘরের আয়তন যদি ছোট হয় তাহলে অতিরিক্ত জিনিসে ভরিয়ে না ফেলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। ভালো কোনো সুগন্ধি কিংবা বড় একটি ফুলের তোড়া টেবিলে রেখে দিতে পারেন তা একদিকে যেমন সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে তেমনি পবিত্র ভাবটাও ফুটিয়ে তুলবে। আলোর ব্যবহারও বিরাট ভূমিকা রাখবে। ল্যাম্পশ্যাড ব্যবহার করে যে কোনো ড্রয়িং রুমেরই চেহারা পাল্টে দেয়া যায়। দেয়াল ও পর্দার রং বিবেচনা করে ঠিক করুন কোন রংয়ের আলো বা ল্যাম্পশ্যাড ব্যবহার করবেন। তবে বসার ঘর অর্থাত্ ড্রয়িংরুমের জন্য বড় ও ত্রিভূজ আকারের ল্যাম্প ব্যবহার করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। দুই থেকে আড়াই ফুট উচ্চতার কারুকার্যময় ল্যাম্পশ্যাডের ব্যবহারে ঘরে এক দৃষ্টিনন্দন ও মায়াময় আবহ ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। ঘরের কোনায় দৃষ্টিনন্দন শোপিসও ব্যবহার করতে পারেন।
খাবার ঘর : ঈদে অতিথি আপ্যায়ন মানেই মজাদার সব খাবারের সমারোহ। সবাই চায় এই দিন উন্নতমানের খাবারকে দৃষ্টিনন্দনভাবে অতিথির সামনে উপস্থাপন করতে। কিন্তু শুধু কি সুস্বাদু খাবার দৃষ্টিনন্দনভাবে উপস্থাপন করলেই চলবে! খাবার ঘরটাও হতে হবে চমত্কার সাজে সজ্জিত। আর এজন্য দরকার সুন্দর পরিকল্পনা। প্রথমেই আসা যাক খাবার টেবিলের প্রসঙ্গে। এমনিতেই ডাইনিং টেবিল হয় একটু বড় সাইজের। ঈদে যেহেতু অনেক অতিথি আগমনের ব্যাপার থাকে তাই এই ব্যাপারটি মাথায় রেখে বড় সাইজের টেবিলের ব্যবস্থা করুন। খেয়াল রাখতে হবে টেবিলটির অবস্থান যেন হয় ঘরের মাঝখানে। প্রচুর আলো-বাতাসযুক্ত ঘরে খাবার পরিবেশন করাই উত্তম। ঘরের পর্দার ক্ষেত্রে হালকা রংকেই প্রাধান্য দিন। এতে একটা স্নিগ্ধ ভাব ফুটে উঠবে। দেয়ালের কাছাকাছি স্থানে লাইটশ্যাড ব্যবহার করলে স্নিগ্ধতা আরও বেড়ে যাবে। চমত্কার নকশার টেবিলম্যাট ব্যবহারে অতিথির মনোরঞ্জন হতে পারে। বেছে নিতে পারেন পছন্দসই টেবিলম্যাট। গ্লাসস্ট্যান্ড, টিস্যু পেপার বক্স ইত্যাদি রাখতে হবে টেবিলের মাঝামাঝি স্থানে। ঘরের একপাশে বড় একটা আয়না রাখলে ঘরটাকে বড় দেখাবে। সম্ভব হলে দু’একটি গাছের টবও রাখতে পারেন। এতে প্রাকৃতিক ভাবটা পাওয়া যাবে।
শোবার ঘর : শোবার ঘরে যদিও অতিথিদের আগমনের কোনো ব্যাপার নেই—তারপরও ঈদ উপলক্ষে আপনার নিজের ভালো লাগা ও মানসিক প্রশান্তির জন্যই সুন্দরভাবে সাজাতে পারেন। শোবার ঘরের বিছানার চাদর, বালিশ কভার, পর্দা সবই হতে পারে উজ্জ্বল রংয়ের। তাজা ফুলের আবেদনই আলাদা। সেজন্য গোলাপ, রজনীগন্ধার মতো ফুলকে প্রাধান্য দিন। ফুলের সৌরভ আর সৌন্দর্য মিলে এক অন্য রকম ভালো লাগার সৃষ্টি করবে। ড্রেসিং টেবিলে দুই পাশে দুটি ছোট ফুলদানি রেখে দেখতে পারেন। ঘরের চেহারাটাই পাল্টে যাবে।
রান্না ঘর : রান্না ঘরের সাজগোজের ব্যাপারটিতে প্রথমেই আসে এর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা। নজর রাখতে হবে এদিকটায়। সাজানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে দামি ও কম দরকারি জিনিসগুলো রাখুন কিচেন রেকের উপরের দিকটায়। কাচ, মেলামাইন, মাটি, অ্যালুমেনিয়াম ইত্যাদি বাসন-কোশন ও কাপ-পিরিচ চামচ আলাদা আলাদা স্থানে রাখুন। এতে এলোমেলো বা ভেঙে যাওয়ার ভয় থাকবে না। রান্না ঘরের এক পাশে রাখতে পারেন কিছু শোপিসও। সর্বোপরি আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখাটা সবচেয়ে জরুরি।
অন্যান্য : ঘরের সাজ বা অতিথি আপ্যায়নে কাজে লাগবে এমন জিনিস যদি কিনতে চান তা কিনে ফেলুন আগেই। কারণ, ঈদ আসতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। কুশন কভার, পর্দা, বিছানার চাদর, বালিশ কভার ইত্যাদি যদি নতুন ব্যবহার না করেন তাহলে পুরনোগুলোই ধুয়েমুছে আয়রন করে রাখুন। ঘর সাজাতে শোপিসের কদর অনেক। তাই ঈদ উপলক্ষে কিনতে পারেন নতুন শোপিস।

Relaeted Other Islamic Blog

Other Blog-site: