Main Slogan:

হে ইমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর (সূরা বাকারা : ২০৮)

শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১০

ঈদে আশেপাশে এক চক্কর

ঈদে আশেপাশে এক চক্কর


ছোট্ট ছুটিতে আমরা কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ পাই না প্রায়ই। সিদ্ধান্ত নিতেই ছুটি শেষ! মনকে তখন বোঝাতে হয়, আগামী ছুটিতে...। স্বল্প সময়ের ছুটি কিংবা অবসরকে অর্থপূর্ণ না করার কারণ বেড়ানোর স্থানের খোঁজখবর না জানা। এ ব্যর্থতা আমাদের, ভোগায়ও আমাদের। ঈদের ছুটিকে আনন্দময় করে তুলতে আমাদের এবারের আয়োজন। ঈদের ছুটিতে আমরা কোথায় কোথায় বেড়াতে যাব, তা ঠিক করে নেই। ঢাকা কিংবা ঢাকার পাশে ও বাইরে রূপসী বাংলার দর্শনীয় স্থান এবং যেখানে যাওয়া হয়নি সেসব সম্পর্কে তুলে ধরা হলো। বেড়ানো, হোক না তা স্বল্প সময়ের জন্য। তা আর দেরি কেন! কোথায় যাবেন ঈদের ছুটিতে তা এখনই ঠিক করে নিন। লিখেছেন রাজীব পাল রনী

নন্দন : যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তি ও ডিজাইন এবং ভারতের নিকো পার্কের সহযোগিতায় তৈরি নন্দনপার্ক। নবীনগরের কাছে বাড়ইপাড়ায় ১২০ বিঘা জায়গাজুড়ে বিশাল এ পার্কে ভেসে আসে সাগরের ধ্বনি। পার্কে রয়েছে ক্যাবল কার, প্যাডেল বোট, আইস ল্যান্ড, ক্রেজি সাইকেল, ক্যাটার পিলার এবং নেট-এটলসহ অসংখ্য রোমাঞ্চকর রাইড। এছাড়া বনভোজনের জন্য আদর্শ স্থান। রয়েছে বিভিন্ন দোকান। দোকানে সমুচা, সিঙ্গারা থেকে শুরু করে ফ্লাইড চিকেন—সবই পাবেন। ৫৫০টি গাড়ি পাকিং এবং কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা। ছুটির দিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা এবং অন্যান্য দিন বেলা ১১ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য পার্ক খোলা থাকে। পিকনিক বা বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন। ফোন : ৯৮৯০২৮৩, ৯৮৯০৯২১, ৯৮৯৮৯৪৯, ০১৮১৯-২২৩৫২৯।
ফ্যান্টাসি কিংডম : ঢাকার আশুলিয়ার বড় বিনোদন কেন্দ্র ফ্যান্টসি কিংডম। মজার ল্যান্ডস্কেপিং এবং রোমাঞ্চকর সব রাইড রয়েছে এ পার্কে। যেমন—রোলার কোস্টার, জায়ান্ট ফ্লম, সান্ডামারিয়া, ম্যাজিক কার্পেট, ওয়ালি বার্ড, জুজুট্রেন, বাম্পার বার, বোটসহ আকর্ষণীয় আরও অনেক রাইড। তাছাড়া সঙ্গেই ওয়াটার কিংডমের পানির মধ্যে বিনোদনের অপূর্ব আয়োজন। মাটির নিচ দিয়ে ট্যানেল পার হয় বা সাগরের উত্তাল ঢেউ তৈরি করা ওয়েভপুল আপনাকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত। ইতিহাস সমৃদ্ধ স্থাপনা জাতীয় স্মৃতিসৌধ, চুনাখোলা মসজিদ, ষাটগম্বুজ মসজিদ, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার এবং কান্তজিউর মন্দিরের প্রতিকৃতি উপভোগ করতে পারেন হেরিটেজে। খাবারের জন্য আন্তর্জাতিক মানের রেস্টুরেন্ট ও ওয়াটার ক্যাফে রয়েছে। তাছাড়া রয়েছে কেনাকাটা এবং গিফটশপ। বিশেষ দিন ও শুক্রবার আয়োজন করা হয় কনসার্টের। ফ্যান্টাসি কিংডম ৪০০ গাড়ি পাকিং এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা। ছুটির দিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে। যোগাযোগ : ৮৮২৯৮৭১, ৮৮১৪০২৮।
পদ্মা রিসোর্ট : বাংলাদেশের নদীনির্ভর জীবনযাত্রার হাজার বছর ধরে যে অপরূপ সৌন্দর্য দেশ ও বিদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি ট্যুর অপারেটর। পদ্মার চরের মধ্যে তারা গড়ে তুলেছে পদ্মা রিসোর্ট। ভ্রমণপ্রিয়দের আনন্দ দিতে কি নেই এখানে! মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার ঘোরাদৌর বাজারের অপরপাশে নদীর মাঝেই বিশাল বিস্তৃত চড়ের মধ্যে পদ্মা রিসোর্ট। পদ্মার চরে গড়ে ওঠা রিসোর্টে থাকার জন্য আছে ১৮টি ডুপ্লেক্স। ঘরের চাল সুন্দরী পাতা দিয়ে তৈরি। দেয়াল ও অন্যান্য জায়গায় বাঁশ এবং তালগাছের পাতা ব্যবহার করা হয়েছে। রিসোর্টটির চারদিকে পদ্মা নদী প্রবাহিত হওয়ায় সার্বক্ষণিক মৃদু ঠাণ্ডা বাতাস বিরাজ করে।
বালুচরে পদ্মা রিসোর্টে বসে দেখতে পারেন সূর্যাস্ত বা সূর্যোদয়। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রিসোর্টের ভাড়া পড়বে ২৩০০ টাকা আর ২৪ ঘণ্টা থাকা-খাওয়ার জন্য ভাড়া পড়বে ৩৫০০ টাকা। পদ্মা রিসোর্টে ঘুরতে যেতে চাইলে যোগাযোগ করুন মিলেনিয়াম ট্যুর অপারেটর, ৮৪ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০। ফোন : ০১৯১৩-৫৩১৮২০ অথবা ০১৭১৩-০৩৩০৪৯।
রাসেল পার্ক : ঢাকা-নরসিংদী সড়কে মুড়াপাড়ায় রাসেল পার্কের অবস্থান। ঢাকা থেকে ২৩ কিলোমিটার দূরত্ব। ২০ টাকার টিকিটের বিনিময়ে সবুজ গাছের সারি, মিনি চিড়িয়াখানা, পুকুর এবং খেলার মাঠসহ ছোট-বড় কটেজ ঘুরে দেখা যায়।
ইনানী ও হিমছড়ি সমুদ্র সৈকত : ইনানী সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার সময়টা জোয়ার-ভাটা হিসাব করে নির্ধারণ করাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কক্সবাজার থেকে ইনানী সমুদ্র সৈকতের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। এখানে রয়েছে সারিসারি ঝাউ বাগান ও সৈকতের অপর ছড়ানো-ছিটানো ছোট-বড় পাথর। ইনানী বিচে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখার মজাই আলাদা। কক্সবাজার থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটারের পথ হিমছড়ি। এখানে সৈকতের শেষ সীমানায় লোকালয় ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে আছে উঁচু পাহাড়। পাহাড়ের গা-বেয়ে নেমে আসা ঝরনার অপরূপ দৃশ্য চোখে পড়বে। এখানকার পরিবেশ শান্ত। কক্সবাজার থেকে লোকাল জিপে জনপ্রতি ভাড়া ৫০-৭০ টাকায় পাহাড়ঘেঁষা রাস্তা দিয়ে পৌঁছে যেতে পারেন হিমছড়িতে। হিমছড়ি যেতে সময় লাগবে ৪০-৫০ মিনিট।
পানামনগরী : সোনারগাঁয়ে অবস্থিত পানামনগরী। সোনারগাঁয় এক সময় বাংলার স্বাধীন সুলতানদের রাজধানী ছিল। আপনি পানামনগর দেখার পাশাপাশি ঘুরে আসতে পারেন সোনারগাঁয়ের লোকশিল্প জাদুঘরে। ১১টি গ্যালারি রয়েছে। প্রতিটি গ্যালারিতে দুর্লোভ ঐতিহ্যের সংরক্ষিত আছে। গ্যালারিগুলো হলো নিপুণ কাঠ খোদাই গ্যালারি, গ্রামীণ জীবন, পটচিত্র, মুখোশ, নৌকার মডেল, আদিবাসী, লোকজ বাদ্যযন্ত্র ও পোড়ামাটির তৈজসপত্র, বাঁশবেত, শীতল পাটির গ্যালারি। তাছাড়া ফাউন্ডেশন চত্বরে দু’জন অশ্বরোহী ভাস্কর্য, দৃষ্টিনন্দন লেক, গরুর গাড়ির সংগ্রাম ভাস্কর্য। মতিঝিল থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পানামনগরীতে যেতে পারেন যে কোনো মোগড়াপাড়াগামী বাসে। বাসে ভাড়া লাগবে ২০-২৫ টাকা। মোগড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডে নেমে রিকশায় বা অটোতে যেতে পারেন পানামনগরীতে।
বিভিন্ন বিনোদনের স্পট : ঢাকা চিড়িয়াখানা—মিরপুর, ফোন : ৯০০২৯৫৪, ৯০০২০২০। বোটানিক্যাল গার্ডেন—মিরপুর, ফোন : ৮০১৮০৯২, ৮০১৯১৩৬, শিশুপার্ক : শাহবাগ, ফোন : ৮৬২৩৩০৪, জাতীয় জাদুঘর—শাহবাগ; আহসান মঞ্জিল— লালবাগ; হেরিটেজপার্ক : সাভার; জাহানারা ইমাম জাদুঘর : ৫৫, এলিফ্যান্ট রোড, লালবাগ কেল্লা : লালবাগ; জাতীয় বিজ্ঞান প্রযুক্তি জাদুঘর—আগারগাঁও, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর—ধানমন্ডি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার—বিজয়সরণি, সামরিক জাদুঘর—বিজয়সরণি। এছাড়াও ঢাকার বাইরে কুমিল্লার ময়নামতি; কুয়াকাটা, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার, সুন্দরবন, মনোরম স্থানে যেতে পারেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Relaeted Other Islamic Blog

Other Blog-site: