রমজান থেকে কী পেলাম
লেখক: মাওলানা লুত্ফর রহমান ইবনে ইউসুফ | বুধ, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১১
মহাপবিত্র মাহে রমজান, বেহেশতী মেহমান। এ মাসেই অবতীর্ণ হয়েছে মহান আল্লাহ তাআলার নির্দেশনায় মহাগ্রন্থ, মহাপবিত্র আল-কুরআন। যাতে রয়েছে মু’মিন মুসলিমদের আত্মশুদ্ধির জন্য তাকওয়া অর্জন ও ধৈর্য ধারণের পাথেয় হিসেবে মহাকল্যাণময় ‘সিয়াম’ সাধনা আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ বিধান। এ বিধান যারা সুষ্ঠুভাবে পালন করেছে তাদের দ্বারাই অর্জিত হয়েছে আত্মশুদ্ধির উপায় হিসেবে তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতি এবং ধৈর্যের সোপান। এরাই হচ্ছে মহাভাগ্যবান মহান আল্লাহ তাআলার মুত্তাকী বান্দা। এদের জন্যই মহাপুরস্কার হিসেবে অসীম দয়াময় ও দয়াবান মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেছেন, চিরসুখের, মহা আনন্দের, জান্নাতের অফুরন্ত নেয়ামতের কথা ও তাদের আরামের আসবাবপত্রের ও সুখশয্যার বর্ণনা।
মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, “নিশ্চয়ই সাফল্যমণ্ডিত সে, যে পবিত্র (যার আত্মা বিশুদ্ধ), (সূরা আলা-০৯) তিনি তার মুত্তাকী বান্দাদের সম্পর্কে আরো বলেন, ‘মুত্তাকীদের জন্য আছে সাফল্য. বাগানসমূহ ও আঙ্গুরসমূহ, সমবয়স্ক উদীপ্ত যৌবনা তরুণী এবং পরিপূর্ণ পানপাত্র।” (সূরা-নাবা-৩১-৩৪)
আরো ইরশাদ হচ্ছে “তোমরা প্রতিযোগিতা কর, স্বীয় প্রতিপালকের নিকট থেকে ক্ষমা এবং জান্নাতের জন্য, যার প্রশস্ততা ‘আসমান ও যমীনের সমান’ যা মুত্তকী বা আল্লাহভীরু বান্দাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।” প্রকৃত রোজাদাররাই মুত্তাকী হিসেবে ভূষিত। কেননা তারা ঈমান ও সওয়াবের আশায় এ কাজ সম্পন্ন করেছেন। তার মহাপ্রভু মহান আল্লাহর ভয়ে রোজা রেখে সকল পাপ ও পাপকার্য ত্যাগ করে। তাই এর প্রতিদান আল্লাহ নিজ হাতে দেবেন। সুতরাং রোজার প্রকৃত মূল্য মানুষ ধারণা করতে অক্ষম। রোজার বিনিময়ে এরচেয়ে বড় পাওনা আর হতে পারে না যেখানে প্রিয় নবী (স.) ঘোষণা করেছেন, যে লোক রমজান মাসের রোজা রাখবে ঈমান ও সওয়াবের আশায় তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (সহীহ বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ)
নবী করীম (স.) আরো বলেছেন, এটা ধৈর্যের মাস এবং ধৈর্যের ফল হচ্ছে জান্নাত। (বায়হাকী)
মাহে রমজানের আগমনের ফলে পৃথিবীতে আল্লাহর রহমত অবারিতভাবে বর্ষিত হতে থাকে। যারাই রোজা রেখেছে, এরা সকলেই আল্লাহর রহমত, মাগফেরাত ও নাজাত বা মুক্তির নহরে অবগাহন করেছে। এরচেয়ে পাওয়া আর কী হতে পারে।
মজুর যেমন সারাদিন কাজ করার পর আপন মালিকের নিকট হতে মজুরি পেয়ে যায়, ঠিক তেমনিভাবে মহান আল্লাহ তাআলা তার খালেছ বান্দা এবং নিখুঁত রোজাদারকে রমজান শেষে নিষ্পাপ করে দেন। এই প্রাপ্তি ও শিক্ষা অনুযায়ী সামনের দিনগুলিতে আমাদের চলতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন